।। লাল বৃত্তে বন্দি ।।

Photo: কথামতো এটি আজকের দ্বিতীয় ঘটনা । আপনারা অনেক লাইক করেছেন দেখে দুটো গল্পই দিলাম । অ্যাডমিনরা খুশি হলে বেশি বেশি গল্প দেয়, মনে রাখবেন ।

ঘটনাটি ঘটেছিলো আমার নানা ভাইয়ের সাথে। নানা ভাই তখন মাঝ বয়সের ছিলেন। ঘরে নানুজান আর উনাদের ২ ছেলে মেয়ে নিয়ে সংসার। পরবর্তীতে নানুজানের কাছ থেকেই ঘটনাটি শুনেছি আমি এবং আমার অন্য ভাইবোন।

নানা ভাই আমাদের গ্রামেরই একটা স্কুলে হেড মাস্টার ছিলেন। ঘটনা অনেক আগের। ১৯৮০ সালের দিকের। তো, তখন গ্রামে গঞ্জে বিদ্যুৎ এর তেমন প্রচলন ছিল না। বেশিরভাগ মানুষই কুপি বা হারিকেন ব্যাবহার করতো। নানা ভাই স্কুল থেকে মাঝে মাঝে ফিরতে দেরি হয়ে যেত। দেরি হয়ে গেলে উনি সেখানে নামাজ আদায় করে তারপর বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা করতেন। উনার কাকা বিদেশ থেকে একটা টর্চ লাইট পাঠিয়েছিলেন। সেই টর্চের আলোই মাঝে মাঝে হতো উনার পথ চলার সম্বল।

যেদিনের ঘটনা, সেদিনও নানা ভাই একটু রাত করে বাড়ি ফিরছিলেন। রাস্তায় একটা পুরনো বট গাছ পড়ে। দিনের বেলায়ও জায়গাটা কেমন যেনো অন্ধকার অন্ধকার থাকে। একটা জমাত বাধা বাতাস যেনো পাক খায়। তখন গ্রামে লোকজন বলতে বেশি মানুষ ছিল না। দেখা যেত, পুরো গ্রাম মিলে হয়তো ২০০ মানুষ। তাই সবারই সবার সাথে চেনা জানা ছিল। যাই হোক, নানা ভাই সেই বট গাছের কাছাকাছি আসার সময় হটাত দুটো ছায়ামূর্তির মতন দেখতে পান। অন্ধকারে হটাত নাড়া ছাড়া দেখায় তিনি একটু চমকে যান। আস্তে করে আলো ফেলে দেখার চেষ্টা করেন কাউকে দেখা যায় কিনা। আলো ফেলার খানিক আগেও যেখানে আওয়াজটা হয়েছিলো, আলো ফেলতেই দেখলেন জায়গাটা ফাঁকা। তবে যেখানে আওয়াজ হয়েছিলো সেখানে কিছু বটের শাখা নড়ছে। নানা ভাই জিজ্ঞেস করেন ওখানে কেউ আছেন কিনা। কিন্তু কোনো সাড়া নেই। এবার নানা ভাই একটু সাহস নিয়ে বুকে দোয়া পড়ে ফুঁ দিয়ে এগুতে থাকেন। খানিকটা পথ যাওয়ার পর উনার ভয় আস্তে আস্তে কেটে যেতে লাগে। এরপর আর খানিকটা গেলেই বাড়ি। নানা ভাই দ্রুত পায়ে পথ চালালেন। হটাত পেছনে কারো পায়ের আওয়াজ পাওয়া গেলো। কে যেনো পা হেঁচড়ে হেঁচড়ে হাঁটছে। নানা ভাই ঘুরে পেছন দিকে টর্চ মারলেন। একটা লোক আসছে দূর থেকে। নানা ভাই হেঁড়ে গলায় ডাক দিলেন, কেডা গো বলে। কিন্তু কোনো উত্তর নেই। এদিকে নানা ভাইকে চমকে দিয়ে হটাত সেই মূর্তিটা বাতাসের বেগে সামনে আসতে লাগলো। যেনো উড়ে আসছে। এবার নানা ভাই ভয় পেয়ে দৌড় লাগাতে যাবেন। হটাত খেয়াল করলেন, মূর্তিটার চোখ এই অন্ধকারেও জ্বলজ্বল করছে। অনেকটা পশুর মত। কিন্তু বলা বাহুল্য, সে সময় ভাল্লুক বা ঐ জাতীয় কোনো পশু এমন করে পথে ঘাঁটে উঠে আসতো না। আর সেই মূর্তি টা একজন স্বাভাবিক মানুষের আকৃতি নিয়েই এগুচ্ছিল। নানা ভাই আর সহ্য করতে পারলেন না। ঝেরে দৌড় মারলেন পেছনে ঘুরে। দৌড় মেরে কিছুদূর যেতেই পিঠে কিছুর ছোঁওয়া অনুভব করলেন। দাঁড়ালো কোনো কিছুর আঁচড় মনে হল। নানা ভাই, চিৎকার করে আরো জোরে দৌড় লাগালেন। এবার পেছন থেকে সেই মূর্তিটা(হয়তো, কারন সেটি কি ছিল তা নানা ভাই দেখতে পারেন নি) এসে ধাক্কা দিয়ে উনাকে ফেলে দিল। জ্ঞান হারানোর আগে নানা ভাইয়ের শুধু এতটুকুই মনে ছিল।

পরদিন উনাকে পথের পাশের এক ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়। উনার পিঠে রক্তের মাখামাখি। সবাই মিলে ধরাধরি করে বাসায় আনার পর গ্রামের চিকিৎসক উনাক প্রাথমিক চিকিৎসা করেন। উনার পিঠে বড় বড় নখের আঁচড় লক্ষ্য করা যায়। সেগুলো এতো গভীর ছিল যে অনেকটা কেটে ভেতরে ঢুকে গিয়েছিলো। নানা ভাইকে জরুরী ভাবে ঢাকায় এনে চিকিৎসা করা হয়। উনি প্রায় ১ মাস পর সুস্থ হয়ে উঠেন।

এরপরের দিন সেই বট গাছের ডালে একজনের ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। সেই লোকটা কে ছিল তা ঐ গ্রামের মানুষের অজানা। সেই রহস্য অমীমাংসিতই থেকে যায়।

এই ঘটনার পড়ে নানা ভাই এর সাথে আরো একটি অদ্ভুত ঘটনা ঘটে। সেটি আজকে আর লিখলাম না। তবে, আমার মনে হয়েছে, দুটো ঘটনা এক করলে হয়তো এর কোনো উপসংহার টানা যায়। দ্বিতীয় ঘটনাটি অনেক বড়। তাই আজকে আর শেয়ার করলাম না। আপনারা চাইলে পরবর্তীতে লিখে আমি এডমিনের কাছে পাঠিয়ে দিবো।

যিনি পাঠিয়েছেনঃ Selim Rayhan

বাংলা রি রাইটিং করেছেনঃ অ্যাডমিন

রেগুলার লাইক দিলে রেগুলার গল্প দিবো । কারণ আপনাদের লাইক আমাদের পেজটিকে চালাতে উৎসাহ দেয় । গুডনাইট সবাইকে ।

বাসায় ঢুকেই নাদিয়ার
মা জুলেখা বেগম ভুরু কুঁচকে বললেন,
“এ কেমন বাসা ঠিক করেছ? বড্ড
ছিমছাম আর নির্জন। তার উপর
শহরের এক মাথায়।”
নাদিয়ার বাবা ফারুক সাহেব তার
স্ত্রীর কথা শুনে হাসলেন।
বললেন,“ জানো কত কষ্ট করে এই
বাসাটা জোগাড় করেছি। শহরের
এক পাশে হলেও বাসাটার অনেক
সুবিধা।
: কি সুবিধা?
: প্রধান
সুবিধা হচ্ছে বাড়িওয়ালা এখানে থাকেন
না। পুরো বাড়িটায় নিজেদের
মতো করে থাকা যাবে। আর
সামনে কত খোলা জায়গা। মনে হয়
স্বর্গ।”
: কিন্তু যদি ডাকাত আসে।
আশেপাশে তো তেমন কোন
ঘরবাড়ি নেই। আমদের
মেরে ফেললেও তো কেউ
জানবে না।
: তোমার শুধু উল্টাপাল্টা কথা। কত
বড় দেওয়াল দেখেছ? গেটে সবসময়
দারোয়ান থাকে। আর
কেয়ারটেকার তো আছেই।
: বাড়ির মালিক কোথায় থাকেন?
: বাড়ির মালিক কামাল উদ্দিন
স্বপরিবারে কানাডায় থাকেন।
দুই বছরে একবার দেশে আসেন।
: বাড়িটা মনে হচ্ছে বেশ আগের।
: ৪০-৫০ বছর আগের বাড়ি।
কামাল উদ্দিনের
বাবা বানিয়েছিলেন। অনেক যত্ন
করে তৈরি করা।
: এ বাড়ির খোঁজ দিল কে তোমায়?
: আমার কলিগ রশিদ সাহেব।
: শুধু আমি আর নাদিয়া এত বড়
বাড়িতে থাকব! চিন্তা হচ্ছে।
: চিন্তা করো না। নাদিয়ার
এইচ.এস.সি পরীক্ষার জন্য
তোমরা আটকে গেলে,
নতুবা তোমাদের গাজীপুর
নিয়ে যেতাম।
: তোমার এই বদলির চাকরি আর
সহ্য হয় না।
: আমার তো বেশ ভালোই লাগে।
সারা বাংলাদেশে ঘুরে বেড়াই।
: তোমার কি কালই গাজীপুর
চলে যেতে হবে?
: হ্যাঁ। শুধু বাসা বদলের জন্য
এলাম।
: আজ
মোটামুটি বাসাটা সাজিয়ে ফেলব।
: আচ্ছা ঠিক আছে। নাদিয়া কই?
ওকে যে দেখছি না।
: নাদিয়া…। নাদিয়া…”
নাদিয়া বাড়িটা ঘুরে ঘুরে দেখছে।
বাড়িটা দেখে তার
মাথা ঘুরে গেছে। এত সুন্দর বাড়ি!
সামনে পিছনে গাছপালায় ভর্তি।
শহরের কোলাহল নেই। পাখির
ডাকে কান ঝালাপাল হয়ে যাচ্ছে।
বাড়ির ছাদটা সবচেয়ে সুন্দর।
নাদিয়া ভাবল ছাদে বসে কত কিছু
করা যাবে। বন্ধুদের
মাঝে মাঝে ডেকে তুমুল
আড্ডা দেওয়া যাবে, ফুলের বাগান
করা যাবে,
রাতে তারা দেখা যাবে। ভাবতেই
নাদিয়ার মনটা খুশিতে ভরে উঠে।
দোতালায় চলে যায় নাদিয়া।
দোতালার সবগুলো ঘর তালাবদ্ধ।
দোতালায় তেমন একটা কেউ
আসে না বোঝা যাচ্ছে। হঠাৎ
দোতালার বামদিকের একদম শেষ
ঘরের
সামনে এসে নাদিয়া থমকে দাঁড়ায়।
তার মনে হতে লাগল তালাবদ্ধ
ঘরটির মধ্যে কেউ আছে।
সে তালায় হাত দিতেই
একটি হাসির শব্দ শুনল। অন্যরকম
হাসি।
বাড়িটাতে খুব
ভালোভাবে মানিয়ে নিল
নাদিয়া এবং তার মা। তাদের
দেখে বোঝার উপায় নেই যে এ
বাড়িটা তাদের নয়। বাড়ির
পিছনে ফুলের বাগান করা হয়েছে।
পুরো বাড়ি ঝকঝকে পরিষ্কার
করা হয়েছে। কেয়ারটেকার
নজরুলকে খুব পছন্দ
হয়েছে জুলেখা বেগমের । লোকটার
মধ্যে বিনয় বলে একটা বিষয়
আছে। লোকটা বি এ পাস।
কথাবার্তা শুদ্ধ ভাষায় বলে। বেশ
চালাক চতুর। সে সব
কাজে সাধ্যমত
নাদিয়া এবং জোলেখা বেগমকে সাহায্য
করছে। নাদিয়ার
ইতিমধ্যে নজরুলের সাথে চমৎকার
একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।
নাদিয়া অবশ্য
প্রথমে নজরুলকে দেখে চমকে উঠেছিল।
কারন নজরুলের বাম হাত কনুই
থেকে কাটা।
তবে ধীরে ধীরে সে অভ্যস্ত
হয়ে গেছে।
নজরুলের বয়স ৬০’র কাছাকাছি।
সে বাড়ির সামনেই একটা টিনের
ঘরে একা থাকে। বহুদিন
ধরে সে এই বাড়িতে আছে। এ
বাড়িতে ভাড়াটিয়া খুব কম আসে।
কারন বাড়িটা শহরের শেষ
মাথায়। তবু যারাই এ পর্যন্ত
এসেছে নাদিয়াদের মতো এত
ভালো কাউকে সে পায় নি। ২০
বছর হল বাস
এ্যাক্সিডেন্টে সে তার বউ আর
মেয়েকে হারিয়েছে। নাদিয়ার
মধ্যে সে তার মেয়ের
ছায়া খুঁজে পেয়েছে। মেয়েটা এত
সুন্দর করে চাচা ডাকে যে তার
অন্তর জুড়িয়ে যায়। কলেজ
থেকে আসে সারাদিন নজরুলের
পিছনে পিছনে ঘুরঘুর
করে নাদিয়া। এই গল্প সেই গল্প
করে নজরুলের মাথা খারাপ
করে দেয়।
একদিন
নাদিয়া নজরুলকে জিজ্ঞাসা করে,
“ চাচা দোতালার সব
ঘরে তালা দেয়া কেন?
: সাহেব পরিবার নিয়ে বিদেশ
থেকে আসলে দোতালায় থাকেন।
: আপনার কাছে সব ঘরের
চাবি আছে?
: হ্যাঁ। আছে। প্রতিমাসে একবার
দোতালার ঘর খুলে পরিষ্কার করি।
: এসব ঘরে কি কোন আসবারপত্র
আছে?
: থাকবে না কেন? সবই আছে।
: চাচা একটা কথা বলি?
: বল মা।
: দোতালায় বামদিকের একদম শেষ
ঘরটায় কি আছে?
: তুমি কি ওই ঘরটার
সামনে গিয়েছ নাকি!!
: হ্যাঁ। ঘরটায় বিশাল
তালা দেখলাম। সেদিন হঠাৎ
মনে হল কেউ যেন ঘরের ভিতর
থকে শব্দ করছে। কেমন যেন
গোঙানির শব্দ।
: ওই ঘরটার সামনে তুমি আর কখনও
যাবা না।
: কেন চাচা ?
: ওই ঘরটা সবসময় তালাবদ্ধ
থাকে। আমি কোনদিন
ওইটা খুলতে দেখি নি। বড়
সাহেবের বাবা একদিন এই ঘর
বন্ধ করে আদেশ দিয়ে গেছেন কেউ
যেন ওই ঘর না খোলে। এই ঘরের
কাছে যাওয়াও নিষেধ।
: কি আছে ওই ঘরে চাচা ?
: আমি জানি না।
: চাচা আমি ওই ঘরে যেতে চাই ?
: এসব কথা মুখেও আনবে না।
: আমি জানি ওই ঘরের
চাবি আপনার কাছে আছে।
: তুমি ভুল জানো। ওই ঘরের
চাবি আমার কাছে নেই। আর ওই
ঘরের
চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল।
বড়দের কথা শুনতে হয়,মা।
কিন্তু
নাদিয়া মাথা থেকে চিন্তা ঝেড়ে ফেলে না।
সে ওই ঘরে ঢোকার উপায়
খুঁজতে থাকে। তার মাথায় তখন
নিষিদ্ধ কিছু করার ইচ্ছা ঘুরপাক
খাচ্ছে। প্রচণ্ড কৌতূহল
তাকে গ্রাস করেছে।
সে জানে প্রতিদিন সকাল
১০.৩০-১১ টার মধ্যে নজরুল
চাচা বাইরে যায়। এই সুযোগটাই
সে নিতে চায়। চুপিচুপি নজরুল
চাচার
রুমে ঢুকে চাবি নিতে হবে।
পরিকল্পনামাফিক পরদিন নজরুলের
ঘরে ঢুকে যায় নাদিয়া। টেবিলের
উপরেই
একগোছা চাবি দেখতে পায়।
দেরি না করে চাবিগুলো তুলে নিয়ে ধীরে ধীরে দোতালায়
চলে যায় ও। দোতালার সেই
রহস্যময় ঘরটার
সামনে আসে থমকে দাড়ায়।
তালাটা অনেক পুরনো। তাই
নাদিয়া খোলার সুবিধার জন্য
গতকাল বিকালেই তালার উপর তেল
দিয়ে গেছে।
বেশ অনেকক্ষণ চেষ্টার পর
তালাটা খুলে ফেলে নাদিয়া।
উত্তেজনা, ভয়ে ওর বুকটা ধুক ধুক
করে উঠে। কি আছে ওই ঘরে?
আস্তে আস্তে ঘরটায় ঢুকে পড়ে ও।
পুরো ঘরটা ধূলা আর মাকড়শার
জালে ভর্তি। বাইরের কোন আলো এ
ঘরে এসে পৌছায় না।
নাদিয়া অবশ্য বুদ্ধি করে টর্চ
নিয়ে এসেছে। টর্চ জ্বালাতেই
পুরো ঘরের একটা অবয়ব
দেখতে পায় ও।
পুরো ঘরে এলোমেলো ছেড়া কাগজ,
কাঁচ ছড়ানো ছিটানো। আর তেমন
কিছু চোখে পড়ে না ওর। হঠাৎ
একটা জায়গায় একটা বড় লাল বৃত্ত
দেখতে পায় নাদিয়া। বৃত্তের
পাশে বড় বড় করে কিছু লেখা।
দেখেই বোঝা যায় অনেকদিন আগের
লেখা। লেখাটা ভালো করে দেখার
জন্য বৃত্তের
ভিতরে ঢুকে পড়ে নাদিয়া।
দেয়ালে লেখা ছিল “সাবধান!
কোন অবস্থাতেই এই বৃত্তের
মধ্যে প্রবেশ করবে না।
তাহলে তোমার মাধ্যমে এই
পিচাশটা বাইরে চলে যাবে।”
আবছা ওই
লেখাটা দেখে নাদিয়া কেমন যেন
চমকে উঠে। বৃত্ত থেকে বের
হওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ঠিক
তখনই পুরো ঘরটা যেন কেঁপে উঠে।
কেউ একজন শব্দ করতে থাকে।
নাদিয়ার প্রচণ্ড ভয়
লাগতে থাকে। তার
মনে হতে থাকে ভারি কিছু তার
ঘাড়ে চেপে বসেছে। তার মুখের
রগগুলো স্পষ্টভাবে ফুটে উঠে। কোন
ভয়ংকর শক্তির বলে নাদিয়ার
পুরো শরীর কাঁপতে থাকে।
নাদিয়া সমশ্ত শক্তি দিয়ে ঘর
থেকে বের হয়।
কোনমতে কাঁপা হাতে ঘরে তালা লাগায়।
আবার চুপিচুপি চাবিগুলো নজরুলের
ঘরে রেখে আসে।
শরীরের
অস্বস্তিগুলো কাটে না ওর।
… সারাদিন প্রচণ্ড গরম
লাগতে থাকে। সারা শরীর কেমন
যেন অপবিত্র লাগতে থাকে।
নাদিয়া গোসল করতে ঢুকেছে।
রাতে গোসল করার বদঅভ্যাস তার
আছে। আর আজ শরীরের
অস্বস্তি কাটাতে গোসলটা খুব
দরকার ছিল ওর।
গায়ে পানি ঢালল নাদিয়া।
পানি বরফের মতো ঠাণ্ডা।
নাদিয়ার শরীর যেন জুড়িয়ে যায়।
গুনগুন করে গান গাইতে শুরু করে।
এমন সময়
ইলেক্ট্রিসিটি চলে গেল।
নাদিয়া অবাক হয়। কারন ওদের
আই পি এস রয়েছে। তাই
ইলেক্ট্রিসিটি যাওয়ার কোন
কারন নেই। তাহলে কি আই পি এস
নষ্ট হয়ে গেছে? নানা চিন্তা ওর
মাথায় ঘুরপাক খায়।
নাদিয়া তোয়ালে খুঁজতে লাগল।
অন্ধকারে দিক ওলটপালট
হয়ে যেতে থাকে। তবু
তোয়ালেটা পেয়ে যায় ও। এমন
সময় তোয়ালেটার উপর অন্য
একটি হাতের স্পর্শ পায় নাদিয়া।
চিৎকার করে উঠে। ঠিক তখন
দুটি হাত নাদিয়ার
পুরো শরীরজুড়ে বিচরণ
করতে থাকে। নাদিয়া পাগলের
মতো বাথরুমের
ছিটকিনি খুঁজতে থাকে। কিন্তু
ছিটকিনি খোলার পরও
দরজা খোলে না।
নাদিয়া শরীরে কারও গরম
নিঃশ্বাস অনুভব করে। হঠাৎ
অন্ধকারেই ও একটা ভয়ংকর মুখ
দেখতে পায়।
পুরো মুখটা ক্ষতে ভরা,
চোখগুলো কোটর
থেকে বেরিয়ে আসছে,
জিহ্বাটা অনেক বড় এবং দু
ভাগে বিভক্ত। অনেকটা সাপের
জিহবার মতো। সাপ যেমন
জিহবা দিয়ে শিকারের অবস্থান
দেখে ঠিক তেমনি সেই ভয়ংকর
মুখটা তার
তেলতেলে জিহবা নাদিয়ার
মুখে বুলিয়ে নেয়। ঘৃণা,
ভয়ে নাদিয়ার শরীর গুলিয়ে উঠে।
এসময় পাশে দাড়িয়ে থাকা ভয়ংকর
জিনিসটা নাদিয়ার উপর
ঝাঁপিয়ে পড়ে। বাথরুমে হুটোপুটির
শব্দ শোনা যেতে থাকে। শক্ত
দুটি হাত
নাদিয়াকে পানি ভরতি বড়
বালতির মধ্যে চেপে ধরেছে।
নাদিয়ার নিঃশ্বাস বন্ধ
হয়ে যেতে থাকে। এমন সময়
মা এবং নজরুল চাচার কণ্ঠ
শুনতে পায় ও।
তারা দরজা ভাঙতে শুরু করেন।
কারন অনেকক্ষণ পার
হয়ে গেছে নাদিয়া বাথরুম
থেকে বের হয় নি। জোলেখা বেগম
অনেক ডেকেও তার সাড়া পান নি।
দরজা ভেঙে নাদিয়াকে উদ্ধার
করা হয়। নাদিয়া অজ্ঞান
হয়ে বাথরুমের মেঝেতে পড়ে আছে।
তাকে দেখে মনে হচ্ছে, তার উপর
দিয়ে বড় কোন ঝড় বয়ে গেছে।
নাদিয়ার প্রচণ্ড জ্বর এসেছে।
মাকে সেই ভয়ংকর জিনিসটার
বিষয়ে কিছুই জানাই নি সে।
মা এমনিতেই বেশি চিন্তা করেন।
তার চিন্তা আরও বাড়ানোর কোন
অর্থ হয় না। জোলেখা বেগম
ধরে নিয়েছেন তার
মেয়ে মাথা ঘুরে বাথরুমে পড়ে গেছেন।
আর বেশি কিছু তার মাথায়
আসে নি।
নাদিয়ার মধ্যে আশ্চার্য সব
পরিবর্তন এসেছে। প্রায়ই ও কেমন
যেন পচা একটা গন্ধ পায়। এ
ছাড়া যে কোন ছোট জিনিসেরও
তীব্র ঘ্রাণ পায়। অনেকটা কুকুরের
ঘ্রাণ শক্তির মতো। কয়েকদিনেই
নাদিয়ার ওজন ৫-৬
কেজি কমেছে। খাবারে রুচি নেই,
শরীরটা খুব দুর্বল।
ইদানিং একটা আজব ব্যাপার
ঘটছে। কাঁচা মাছ, মাংস খেতে খুব
ভালো লাগে নাদিয়ার। সেদিন
জোলেখা বেগম যখন বাসায় ছিলেন
না,
নাদিয়া কাঁচা আধা কেজি খাসির
মাংশ খেয়ে ফেলল।
মাংসটা খেয়ে সে খুব তৃপ্তি পেল।
এমন তৃপ্তি সে অনেকদিন পায় নি।
জোলেখা বেগম সেদিন মাংস
না পেয়ে খুব অবাক হন। নাদিয়ার
নীরাবতায় ধরে নেন বিড়ালের
কাজ। তবে তিনি বুঝতে পারছেন এ
বাসার পরিবেশ কেমন যেন
অন্যরকম হয়ে গেছে। সবসময় কেমন
যেন একটা গা ছমছমে ভাব বিরাজ
করে। নাদিয়া কেমন যেন
বদলে গেছে। রাতে ঘুমায় না,
একটুতেই রেগে যায়।
খাওয়া দাওয়া করতে চায় না।
জোলেখা বেগম সেদিন অবাক
হয়ে লক্ষ্য করলেন দেয়ালে অসংখ্য
লাল লাল ছোপ। দেখলে রক্তের
ছোপ বলে মনে হয়। আর
সারা ঘরজুড়ে প্রায়ই
একটা পচা গন্ধ বিরাজ করে।
জোলেখা বেগম সিদ্ধান্ত
নিয়েছেন এ বাড়িতে আর থাকবেন
না। এবার নাদিয়ার
বাবা ছুটিতে আসলেই
বাসা বদলানোর চেষ্টা করবেন।
সেদিন জোলেখা বেগম ব্যাংকের
কিছু জরুরি কাজে বাইরে গেছেন।
নজরুলকে নাদিয়ার
কাছে রেখে গেছেন। মেয়েটা এ
লোকটিকে খুব পছন্দ করে। আর
অসুস্থ
একটা মেয়েকে তো একা রেখে যাওয়া যায়
না। নাদিয়া তার খাটের উপর
বসে নজরুলের সাথে গল্প করছে।
নজরুল চিন্তিত গলায় বলে,
“মা ঠিক করে বলো তো তুমি কি ওই
ঘরে ঢুকেছিলে?”
: হ্যাঁ, চাচা ঢুকেছিলাম।
: তোমাকে আমি নিষেধ করেছিলাম
মা। ওই ঘরে অশুভ একটা কিছু আছে।
যা এখন তোমার
মাধ্যমে খোলা বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
যে কোন সময় বড় কোন অঘটন
ঘটতে পারে।
: কি বলছেন চাচা!
: হ্যাঁ। একদিন আমিও তোমার
মতো কৌতূহলের বশে ওই
ঘরে ঢুকেছিলাম। আমার কাছে ওই
ঘরের চাবি ছিল না।
আমি তালাচাবিওয়ালা ডেকে আনে ওই
ঘরের চাবি তৈরি করেছিলাম।
তবে আমার ভাগ্য
ভালো যে আমি লাল দাগের
ভিতরে ঢুকি নি। সেদিন
আমি একটা ভয়ংকর মুখ
দেখেছিলাম। সে মুখ কোন মানুষের
হতে পারে না। অনেকটা পশুর
মুখের মতো। হিংস্র কিন্তু অসুস্থ
কোন পশু। হঠাৎ মনে হল সেই
পশুটা আমার বাম হাত
ধরে ফেলেছে।
আমি ঝটকা মেরে সরানোর
চেষ্টা করলাম। কিন্তু কোন কাজ
হল না। সে আরও জোরে আমার হাত
ধরে টান দেয়।
সে চেষ্টা করতে থাকে আমাকে লাল
দাগের মধ্যে ফেলে দেয়ার। কিন্তু
দেয়ালের লেখাগুলো আমি আগেই
লক্ষ্য করেছিলাম। হঠাৎ ওই
পিশাচটা আমার বাম হাত
কামড়ে ধরে। আমি ব্যথায় চিৎকার
করতে থাকি। হিংস্র
পিশাচটা আমার রক্ত
চুষে চুষে খেতে থাকে।
মনে হতে থাকে ও খুব তৃষ্ণার্ত।
একটুপর আমার বাম হাতের বিভিন্ন
স্থানে খাবলে খাবলে খেতে থাকে ও।
আমি কোন
মতে নিজেকে ছাড়িয়ে নেই। হঠাৎ
দেয়ালের অন্য
পাশে লেখা দেখলাম, “
যদি পিশাচটা মুক্ত হয়ে যায় এই
কবজটা তোমায়
রক্ষা করতে পারে।”
আমি দেওয়ালে একটা কবজ
ঝুলতে দেখলাম।
আমি সাথে সাথে সেটা নিয়ে নিলাম।
তারপর দ্রুত ওই ঘর থেকে বের
হয়ে গেলাম। আর কিছুদিনের
মধ্যেই আমার বাম
হাতটা ফুলে উঠে। ভিতরে প্রচণ্ড
যন্ত্রণা হতে থাকে। হাতের অনেক
জায়গায় পচন ধরল। শেষমেশ
ডাক্তারের
পরামর্শে হাতটা কেটে ফেলি।
: চাচা আমার এখন কি হবে?
: পিশাচটা তোমার
পিছনে লেগেছে। ও
তোমাকে মেরে ফেলতে চায়। কারন
তোমাকে যদি এবার ওই লাল
বৃত্তের মধ্যে নিয়ে যাওয়া যায়
তবে ও আবার বন্দি হয়ে যাবে।
: কি বলছেন? পিশাচটা এখন
কোথায়?
: ও তোমার শরীরের মধ্যেই আছে।
: এ্যা!!!
নাদিয়া একটু উঠে দাঁড়াও তো,
মা।” নাদিয়া উঠে দাঁড়ায়। হঠাৎ
নজরুলের হাতে দড়ি দেখতে পায়
সে।
: দড়ি দিয়ে কি হবে চাচা?”
নজরুল কিছু না বলে এক হাত দিয়েই
নাদিয়াকে শক্ত করে বাঁধার
চেষ্টা করল।
: কি করছেন চাচা!! বাঁধছেন
কেন??
: কারন তোমাকে আমি ওই
ঘরে নিয়ে যাব।”
কথাটি শুনে মুহূর্তেই নাদিয়ার
চেহারা বদলে যায়।
পেশিগুলো সটান হয়ে উঠে,
চোখগুলো জ্বলজ্বল করতে থাকে।
জিহবা নাড়াতে নাড়াতে নাদিয়া ভয়ংকর
ভাবে চিৎকার করে উঠে। বলে, “
না। আমি ওই ঘরে যাব না। যাব
না। যাব না………।”
: যেতে হবে। তোমায় যেতে হবে।
: না, না। কিছুতেই না।” নাদিয়ার
গলায় অন্য কেউ কথা বলতে থাকে।
হঠাৎ
নাদিয়া দড়ি টেনে ছিঁড়ে ফেলে।
তারপর এক ঝটকায় একটা চেয়ার
শূন্যে তুলে নেয়। ছুঁড়ে দেয়
নজরুলের দিকে। নজরুল এর জন্য
প্রস্তুত ছিল না। কয়েক মুহূর্ত
সে চোখে মুখে অন্ধকার দেখল।
নজরুল হঠাৎ লাফিয়ে উঠে বলে, “
শান্ত হ। শান্ত হ বলছি। এই
দেখ।” নজরুল এতদিন
ধরে যত্নে রাখা কবজটা বের
করে। কবজটা দেখে নাদিয়া কেমন
যেন শান্ত হয়ে যায়। ভয়ংকর
পুরুষালি গলায় বলতে থাকে, “
কাছে আসবি না। খবরদার
কাছে আসবি না। আমি কিন্তু এই
মেয়েটারে মেরে ফেলব।” হঠাৎ
নাদিয়ার শরীর মাটি থেকে কয়েক
ফুট উপরে উঠে যায়। কেউ
হিসহিসে গলায় বলে, “ তুই আরও
কাছে আসলে আমি কিন্তু কাপড়
খুলে ফেলব।” নজরুল কথায় কান
না দিয়ে নাদিয়ার
দিকে এগিয়ে যায়। এ সময়
নাদিয়া নিজের সব কাপড়
খুলে ফেলে। নজরুল এক মুহূর্ত চোখ
বন্ধ করে। তারপর চোখ
খুলে নাদিয়ার নগ্ন শরীর
দেখতে পায়। নাদিয়ার শরীরের
বিভিন্ন জায়গায় লাল লাল ছোপ
রয়েছে। মনে হচ্ছে ওর শরীরের
মধ্যে দিয়ে কিছু কিলবিল
করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। নজরুল
ভাবতে থাকে তার
পিছিয়ে যাওয়ার উপায় নেই।
সে পিছিয়ে গেলে পিশাচটা নাদিয়াকে মেরে ফেলবে।
আবার নাদিয়ার কণ্ঠে কেউ বলল, “
কি রে আমার শরীরটা কেমন?
পছন্দ হয়েছে? হি হি হি।” নজরুল
নাদিয়ার হাত ধরে।
টেনে নিয়ে আসতে থাকে।
নাদিয়া শুয়ে গোঙাতে থাকে।
নজরুলের কাছে কবজ থাকায়
পিশাচটা কোন
ক্ষতি করতে পারছে না। তবু
পিশাচটা এত সহজে হাল
ছেড়ে দিতে রাজি নয়। নজরুল
নাদিয়াকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যেতে থাকে।
আর নাদিয়া চিৎকারের পর
চিৎকার করতে থাকে। চিৎকার
শুনে দারোয়ান ছুটে আসে। বলে, “
নজরুল ভাই। একি! আপনি মেয়েটার
এ কি অবস্থা করছেন!! ছি! ছি!
ছি!”
নজরুল দারোয়ানের কথায় কর্ণপাত
করে না।
নাদিয়াকে টেনে হিঁচড়ে দোতালায়
নিয়ে যায়। নাদিয়া কয়েকবার
তার পায়ে কামড় দিয়েছে, আঘাত
করে রক্ত ঝরিয়েছে। তবু নজরুল
থামে না। হঠাৎ নজরুল
দেখতে পায় নাদিয়ার চোখ, নাক
দিয়ে অস্বাভাবিকভাবে রক্ত
ঝরছে।
সে বুঝতে পারে নাদিয়াকে বাঁচানোর
জন্য আর বেশি সময় বাকি নেই।
দোতালার ওই ঘরটা নজরুল
আগে থেকেই খুলে রেখে গেছে।
দেরি না করে নাদিয়াকে নিয়ে ওই
ঘরে ঢোকে নজরুল।
ধাক্কা দিয়ে নাদিয়াকে লাল
বৃত্তের মধ্যে ফেলে দেয়। মুহূর্তেই
নাদিয়ার চিৎকার
বহুগুনে বেড়ে যায়।
মনে হতে থাকে প্রচণ্ড যন্ত্রণায়
তার শরীরটা নিঃশেষ
হয়ে যাচ্ছে। নজরুল ব্যথাতুর
চোখে নাদিয়ার
দিকে তাকিয়ে থাকে। নাদিয়ার
শরীরে খিঁচুনি শুরু হয়। পাগলের
মতো কাঁপতে থাকে ওর শরীরটা।
আর ভয়ংকর সব
গালি দিতে থাকে নাদিয়া। এর
সাথে তীব্র আর্তনাদও
করতে থাকে। হঠাৎ অসুরের
মতো কোন শক্তি নাদিয়াকে লাল
বৃত্তের বাইরে ছুঁড়ে দেয়।
নাদিয়া তখন পুরোপুরি অচেতন।
ঘরের
ভিতরে হুটোপুটি বাড়তে থাকে।
নজরুল
নাদিয়াকে বাইরে নিয়ে আসে।
ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। এমন
সময় জোলেখা বেগম আর দারোয়ান
দোতালায় আসে। নাদিয়ার এমন
অবস্থা দেখে মাথা ঘুরে পড়ে যান
জোলেখা বেগম।
পরিশিষ্ট
নাদিয়ার সম্মানহানির
অভিযোগে নজরুলের যাবজ্জীবন
কারাদণ্ড হয়। তার সত্য
কথাগুলো কেউ বিশ্বাস
করতে রাজি হয় নি। নাদিয়াও
অবশ্য কিছু বলার সুযোগও পায় নি।
তাকে তড়িঘড়ি করে লন্ডনে তার
খালার কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
আবার এ দিকে নজরুলের
বিরুদ্ধে মামলাও চলতে থাকে।
নজরুলের বিরুদ্ধে জোলেখা বেগম
এবং দারোয়ান সাক্ষী দেয়।
নজরুলও পরে আর তার অভিযোগ
অস্বীকার করে নি। তীব্র কষ্ট
তাকে গ্রাস করেছিল।
লন্ডনে খালা এক প্রবাসী ছেলের
সাথে নাদিয়ার বিয়ে দেন।
নাদিয়ার মাঝে মাঝে নজরুল
চাচার জন্য খুব কান্না পায়।
সে জানে নজরুল চাচা তার কোন
অসম্মান করে নি, বরং তিনিই
সেদিন
নাদিয়াকে বাঁচিয়েছিলেন।
নাদিয়া তার
স্বামী সোয়েবকে তার জীবনের সব
কিছু খুলে বলে। সোয়েব
পুরো বিষয়টাই সহজ ভাবে নেয়
এবং বিশ্বাস করে।
তারা সিদ্ধান্ত নেয় পরের
মাসে দেশে এসে নজরুল
চাচাকে বাঁচানোর চেষ্টা করবে।
কিন্তু তাদের দেশে আসার এক
সপ্তাহ আগে জেলের মধ্যেই
নজরুলের মৃত্যু হয়।

>>>> সমাপ্ত <<<<

Related posts