ভয়ংকর এক রাত : কিছু পাতা অধ্যয় ৯

ভয়ংকর এক রাত:

হাটতে হাটতে অনেক অচিন পথ পারিয়ে শেষ মেষ আমার গ›তব্য পৌঁছালাম। হোটেলে ভিজা শরীর নিয়ে ঢুকতেই আমাকে দাড়ওয়ান প্রশ্ন করল,
: স্যার সব ঠিক আছে ত?
: হ্যাঁ সব ঠিক আছে।
: রাতে বাইরে যাইয়েননা ছিনতাই হতে পারে।

আমি কোন উত্তর না দিয়েই আমার রুমের দিকে যেতে থাকলাম আর ভাবলাম আমার আর কিইবা আছে যে ছিনতাই হবে।

ঘুম নেই চোখে তাই হোটেলের ছাদে গিয়ে বসে আছি একা একা আর ভাবছি। আমি কি সব সময় চিন্তে ভুল করি, আমি কি নিজে ব্যর্থ নাকি সফল? নিজেকে বড় অসহায় মনে হচ্ছে। ভাবলাম বেচারী প্রিয়া আমার কথা ভেবে ভেবে হয়তো অনেক কাঁদছে।

আকাশের ঐ চাঁদ তুমিই বল আমার প্রিয়া কেমন আছে? ওকি আমার কথা ভাবছে? নাকি ওর চোখের জ্বল এখন ঝড়ছে? একা একা কখন যেন মনের অজান্তে চাঁদের সাথে কথা বলতে শুরু করলাম। চাঁদের সাথে কথা বলতে বলতে রাত দুইটা বেজে গেছে। ছাদ তেকে নেমে পরলাম। রুমে শুয়ে শুয়ে বাবছি কালকেই ঢাকায় ফিরে যাব।

ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছা করছে না, রুমটা অ›ধকার, মনে হচ্ছে মাত্র সকাল হল, তারপরও কষ্ট করে উঠলাম ভাবলাম দশটার আগে বাস স্ট্যাডে পৌঁছাতে হবে, না হলে খবর আছে। মুখটা ধুয়ে রুমে এসে ঘড়িতে দেখি নয়টা বাজতে আর মাত্র দশ মিনিট, নাস্তা খাওয়ার আর সময় নেই দৌড়।

শেষ মেষ বাস স্ট্যান্ড পৌঁছালাম কিন্তু এখন দশটা তিরিশ বাজে। বাস আরও আধা ঘন্টা আগেই গন্তেব্যের উদ্দেশ্যে চলে গেছে।

এমন একটা হোটেলে উঠতে হল শেষ পর্যন্ত যে বলে বুঝাতে পারব না। এখানে রুমের সাথে আলাদা বাথরুম তো নাই তারপর আবার চব্বিশ ঘন্টা পানিও থাকে না। কি যে কষ্ট হচ্ছে আমার এখন আর কক্সবাজার ভাল লাগছে না। বাসায় ফিরেও যেতে পারছি না। প্রিয়ার সাথে তো দূরের কথা আম্মুর সাথেও কথা বলতে পারছি না।
ভাবলাম আজ রাতটা কোন মতে থেকে কালকে সকালেই ঢাকায় ফিরে যাব। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পরলাম। যাতে সকালে উঠতে পারি।
কিন্তু ভাগ্য এতোটাই খারাপ যে যখন ঘুম ভাঙ্গে তখন দেখি দুইটা বাজে। তবে দুপুর দুইটা না রাত দুইটা, প্রচন্ড ঝড় হচ্ছে বাইরে, জানালার কাঁচ ভাঙ্গার শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেছে কারেন্ট ও চলে গেছে। অন্ধকার ঘুট-ঘুটে অন্ধকার কিছুই দেখা যাচ্ছে না। আমার নিজের হাতটাই আমি দেখতে পাচ্ছি না, মনের মধ্যে খুব ভয় লাগছে। কেন যেন মনে হচ্ছে আমি বাদে আরেক জন এ ঘরে আছে কিন্তু কথা বলছে না। চুপচাপ আমাকে দেখছে। আমার বারবার ইচ্ছা করছে বলতে, কে তুমি? তুমি কি আমাকে দেখতে পাচ্ছো? তুমি এখানে কি করে এলে?

http://1.bp.blogspot.com/-6HRX2Uj68J0/T9nmHNsUpwI/AAAAAAAAFyk/YBPS4iCtjsw/s1600/love17.jpg

 

ভোর সাতটা বাজে বাইরে এখনও ঝড় চলছে, বাতাসের ধাক্কায় জানালাটা নড়ছে, আমি এখনও প্রশ্নটা করতে পারি নাই কারণ আমি ভাল করেই জানি যে ঘরে কেউ নাই তারপরও যদি কেউ আমার প্রশ্নের উত্তর দেয় ভয়ে আমি বিছানা থেকেও নামি নাই, শরীর থেকে টপ টপ করে ঘাম পরছে যদিও বাতাসে পর্দা উড়ছে।

দুপুর দুইটা চাঁদ চলে গেছে পরিস্কার আকাশে সূর্যের নতুন আলো নেই কোন অন্ধকার, নেই কোন ভয়। এমন ঝড় আমি আগে কখনও দেখি নাই। এখনও টিপ টিপ বৃষ্টি পরছে। বাইরে যাওয়া সম্ভব না ভাবলাম বিকালেই একবারে বাহির হয়ে যাব। যেভাবেই হোক আজকের মধ্যে আমাকে ঢাকা যেতে হবে। আমার আর ভাল লাগছে না, আম্মু, আব্বু সবাই হয়ত খুব চিন্তা করছে আর প্রিয়াত কাঁদতে কাঁদতে মনে হয় শেষ হয়ে যাচ্ছে।

বিকালে বাহির হলাম ঠিকই কিন্তু সন্ধ্যার আগেই ঐ অন্ধকার রুমে আবার ফিরে আসতে হল কারন রাস্তা ঘাটে পানি জমে গেছে ব্যাগ নিয়ে এত দুর যাওয়া কোন মতেই সম্ভব নয়। ভাবলাম ফোন করি কিন্তু নেটওয়ার্ক এর জন্য ফোন করাও স¤ভব হল না।

খুব খারাপ লাগছে কিন্তু কিছুই করার নেই কারন হাতে এমন টাকাও নাই যে অন্য কোন ভাল হোটেলে উঠব। তাই বাধ্য হলাম অ›ধকারের মধ্যে থাকতে। কে জানতো যে আমাকে এ হোটেলে চারটা রাত কাটাতে হবে।

সকাল দশটা বিশ মিনিট। আমি বসে আছি, কিছুক্ষণের মধ্যেই ঢাকার উদ্দেশ্যে বাস ছাড়বে। আজকে বিকাল চারটায় পরীক্ষার জবংঁষঃ দিবে। যদিও আরও আগে ঢাকায় যাওয়ার ইচ্ছা ছিল কিন্তু ঝড়ের কারণে ইচ্ছাটা মাটি হয়ে গেছে। বাস ছেড়ে দিয়েছে আর হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যেই কক্সবাজার থেকে অনেক দুরে চলে যাব। ভাবছি বাস থেকে নেমেই প্রথম প্রিয়াকে একটা ফোন করব।প্রিয়া বেচারী হয়ত আমার কথা ভেবে ভেবে কাঁদছে, প্রিয়াকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরলাম।

.: কিছু পাতা । মেহেদী মেনাফা :.

একটি ভালবাসার গল্প

edited

“কিছু পাতা”উপন্যাসটি আমার জীবনের কিছু সত্য এবং কাল্পনিক ঘটনা নিয়ে লেখা। এটাই আমার জীবনের প্রথম লেখা উপন্যাস, তাই ভুল-ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল।

(if you can’t read cause of Bangla text, you can try image format at this link http://www.black-iz.com/vinnokobor/kisupata.html) (Also you can download this book from this link @ http://www.black-iz.com/kp/kisupata.doc)

Muhammad Mehedi Menafa at facebook : www.facebook.com/muhammadmehedimenafa

Related posts