অবশেষে পরিচিত ঢাকায় আমি : কিছু পাতা অধ্যয় ১১

প্রিয়া তুমি কোথায়?

ঘুম থেকে উঠে দেখি সকাল দশটা বাজে। মুখ হাত ধুয়ে নাস্তা করে নিলাম, তারপর সেভও করলাম, করে ফুল রেডি হয়ে গেলাম। প্রথমেই ইয়াশমিন কে ফোন করে প্রিয়ার বাসার পুরা এড্রেস টা নিয়ে নিলাম। এখন আম্মুর কাছে থেকে পারমিশন নেওয়ার পালা।
: আম্মু আমি একটু বাইরে যাব।
: কোথায়?
: এইত এক ফ্রেন্ডের বাসায়।
: একা,
: হ্যাঁ। কেন?
: তোর আব্বা জানলে কিন্তু রাগারাগি করবে।
: আরে আব্বু অফিস থেকে আসার আগেই আমি চলে আসব। প্লিজ যাই।
: ঠিক আছে কিন্তু দুই ঘন্টার বেশী এক মিনিটও দেরী করবি না।

 

http://threelol.com/wp-content/uploads/2012/02/love-sunset.jpg

 

মিষ্টি কিনেই সরাসরি চলে গেলাম প্রিয়াদের বাসায়, বেল দিতেই শ্বাশুড়ি আম্মা দরজা খুলে প্রশ্ন করলেন, কে তুমি?
: আমি মেহেদী, প্রিয়ার ক্লাসমেট।
:তুমিই মেহেদী! তোমার কথা ও সব সময় বলে, ভিতরে আস।
: প্রিয়া কোথায়?
: ও তো ইয়াসমিনদের বাসায় বেড়াতে গেছে, কেন তোমার সাথে কথা হয় নাই?
: না, ওর মোবাইলতো বন্ধ তাই অনেক দিন যোগাযোগ নেই।
: কি বল ওতো নতুন সীম নিয়েছে তোমাকে নাম্বার দেইনি?
: নাত।
মোবাইল নাম্বারটা নিয়ে আরও কিছুক্ষণ কথা বলে চলে এলাম। রাস্তা দিয়ে হাটছি আর ভাবছি সব কেমন যেন মনে হচ্ছে, ইয়াসমিনকে ফোন দিয়ে জানতে পারলাম প্রিয়া ওদের বাসায়ি নেই। প্রিয়ার নতুন নাম্বারে ফোন দিলাম কিন্তু ব›ধ, মনটা আরও খারাপ হয়ে গেল। মনের মধ্যে একটা ভয় ঢুকতে শুরু হয়ে গেছে তবে প্রিয়াকে আমাকে ছেড়ে চলে গেছে? প্রিয়াকি আমাকে ভুলে গেছে? সবই কি বেঈমানী ছিল? ধাৎ মাথাই আমার নষ্ট আমি একটুতেই বেশী বুঝি।

রাত ৯টা ৩০ মিনিট আমি শুয়ে আছি আর শুয়ে শুয়ে ভাবছি প্রিয়া আমাকে ওর নতুন নাম্বার দেইনি কেন? প্রিয়া ইয়াসমিনের বাসায় যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে কোথায় গেছে? ও এতটা বদলে গেল কি করে ভাবতে ভাবতেই মাথায় প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করছি…. আম্মু …. আম্মু

পরদিন সকাল ১০টায় আমিই প্রিয়ার নতুন নাম্বারে কল করলাম,
: হ্যাঁলো, প্রিয়া আছে?
ঐপাশ থেকে, হ্যাঁ। কে আপনি?
: আমি।
: আমি কে?
: মেহেদী।
: ও তুমি! ভাল আছ?
: তুমি কেমন আছ?
: ভাল,
: আমি তোমার সাথে দেখা করতে চাই প্রিয়া।
: আমি তো বাসা থেকে বের হতে পারি না।
: ইয়াসমিনের বাসার কথা বলে বাহির হও। প্লিজ, প্লিজ, প্রিয়া একটু চেষ্টা করে দেখ না।
: আচ্ছা। চেষ্টা করব পরে কথা হবে বাই। লাইন কেটে গেল।

দুপুর একটার দিকে প্রিয়ার নতুন নাম্বার থেকে ঝগঝ এসেছে।

৪:৩০ সরহ, ফযধহসড়হফর ৮ হড়. নৎরফমব বিকাল ৪:৩০ মিনিট আট নাম্বার ব্রিজের উপর দাড়িয়ে আছি। প্রিয়ার খবর নাই, ৪:৪৫ মিনিট …. ৪:৫৫ মিনিট… প্রিয়ার খবর নাই। আমি ওর কথা ভাবছি আবার পূর্বের সেই প্রিয়ার কথা ভাবছি, ভাবতে ভাবতে ঘড়িতে দেখি ৫:২০ বাজে ঙয! গু এড়ফ. এখনও প্রিয়ার কোন খোজ খবর নেই। একবার ভাবি কল দেই আবার ভাবি না থাক সমস্যা হতে পারে, আবার ভাবি ও হয়ত আসবে না আবার ভাবি যদি এসে ফিরে যায়, আর একটু অপেক্ষা করি, আর পাঁচটা মিনিট দেখি।

ছয়টা নাহ এর কোন মানে হয় না। আর সহ্য করা যায় না। কল দিতে বাধ্য হলাম রিসিভ করে ওপাশ থেকে প্রিয়া: হ্যাঁলো কে?
: আমি মেহেদী।
: ওহ! আমরা এসে পরেছি। আর একটু অপেক্ষা কর।

কারও জন্য অপেক্ষা করা যে এত কষ্টের তা বলে বুঝানো স¤ভব না। আর তার উপর যদি হয় প্রিয়ার জন্য অপেক্ষা তাহলে তো কথাই নেই। ৬:৩২ মিনিট ৬:৪০ মিনিট কোন খবর নেই।
আবার কল দিলাম রিসিভ করে, ও পাশ থেকে প্রিয়া; আরে পাগল হয়ে যাচ্ছো কেন বললাম তো আর একটু অপেক্ষা কর।
এটুকু বলেই ফোন কেটে দিল….
সাতটা বাজতে আর মাত্র দশ মিনিট বাকি। একটু পর একটা হলুদ ঞধীর পধন ব্রীজের মাথায় এসে থামল, প্রিয়া নামল কিন্তু এদিকে না এসে কার জন্য যেন অপেক্ষা করছে, বুঝতে পারলাম গাড়িতে আরেকজন আছে। একটু পর ড্রাইভারকে ভাড়া দিয়ে ভিতর থেকে একটা ছেলে বের হল। আমার বয়সী মনে হল। তারপর দুজনে কথা বলতে বলতে আমার দিকে আসছে, মনে হচ্ছে যেন দুজনের হাজার বছর পর কয়েকটা মূহুর্তের জন্য দেখা হয়েছে। তাদের কথা শেষই হচ্ছে না। আমার বুকের ভিতর যেন এক অদৃশ্য আগুনে জ্বলতে শুরু করল। কথা বলার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছি। সব কেমন যেন এক অন্ধকার রাতের ভয়ংঙ্কর স্বপ্নের মতই মনে হচ্ছে।

আমার সামনে এসে দুজনই দাড়াল প্রথমে প্রিয়া বলতে শুরু করল: ও আমার কাজিন আর ও আমার ক্লাসমেট। ছেলেটা হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল: আমি রাজিব। প্রিয়ার চাচাতো ভাই। আমি চুপ করে রইলাম, আমি কি বলব বা আমার কি বলা উচিৎ আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।

রাজিব: আপনার নামটা?
উত্তরে বললাম: মেহেদী, এটুকু বলেই চুপ হয়ে গেলাম, আর কিছুই বলতে পারছি না, সব চুপ করে দেখছি, ও আপনিই মেহেদী?
আমি: কেন আপনি কি আমাকে চিনেন?
: হ্যাঁ। ওর কাছে আপনার কথা শুনেছি।

প্রিয়া রাজিবের পাশে বসেছে আর আমি ওদের অপর পাশে আরেকটা চেয়ারে বসেছি। আমি প্রিয়ার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে প্রিয়ার অদ্ভুত সব আচরনগুলা দেখছি। আর প্রিয়া রাজিবের সাথে কানাকানি করছে। আর কিছুক্ষণ পর পর বিকট এক শব্দে হেসে উঠছে, আর আমার ভিতরটা যেন ছিড়ে যাচ্ছে।

অনেকক্ষণ পর প্রিয়ার দৃষ্টি আমার দিকে ফিরল,
: কেমন আছ তুমি?
: ভাল, তুমি?
: খুব ভাল, তোমার জবংঁষঃ শুনে খুব কষ্ট পেলাম।
: কেন?
: কেন মানে? তুমি ৪.৯৪ …. পেয়েছো।
: হ্যাঁ আর তুমি?
: এচঅ ৫
: খুব খুশি হয়েছি।
: আর রাজিবও কিন্তু আমাদের সাথে পরীক্ষা দিয়েছে ও এড়ষফবহ অ+ পেয়েছে। তাছাড়া পরীক্ষার সময় ওর শরীরটাও ভাল ছিল না তারপরও….
: তাই নাকি, ঈড়হমৎধঃঁষধঃরড়হ রাজিব।
আরও কিছুক্ষন কথা বলার পর, রাজিব বলল
: প্রিয়া চল যাই।
: যাবা?
: হ্যাঁ, ভাইয়া তাহলে যাই আবার পরে দেখা হবে।

আমি কিছু না বলে চুপ করে বসে আছি। ভাবছি প্রিয়াকে আটকাই। আবার ভাবছি না জোর করে কখনও ভালবাসা পাওয়া যায় না, যাক ও চলে যাক ওর পথের বাঁধা হতে চাই না।

.: কিছু পাতা । মেহেদী মেনাফা :.

একটি ভালবাসার গল্প

edited

“কিছু পাতা”উপন্যাসটি আমার জীবনের কিছু সত্য এবং কাল্পনিক ঘটনা নিয়ে লেখা। এটাই আমার জীবনের প্রথম লেখা উপন্যাস, তাই ভুল-ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল।

(if you can’t read cause of Bangla text, you can try image format at this link http://www.black-iz.com/vinnokobor/kisupata.html) (Also you can download this book from this link @ http://www.black-iz.com/kp/kisupata.doc)

Muhammad Mehedi Menafa at facebook : www.facebook.com/muhammadmehedimenafa

Related posts