গার্হস্থ্য প্রণালী ::::: মে – ’১২

আসবাবপত্রের পরিচর্যা

কীভাবে করবেন

সানজিদা বেগম

চারদিকে গরম হাওয়া। আর মাঝে মাঝে দমকা বাতাস বলে দিচ্ছে বৈশাখ-জ্যোষ্ঠের ঝড়ের কথা। বাতাসের সাথে ময়লা ও ধুলাবালির ছড়াছড়ি পড়ে যায়। এ অবস্থায় ঘরের আসবাবপত্রের নিয়মিত পরিচর্যা করছেন তো? কারণ, এ সময়ে ঘরের ছোট-বড় সব ধরনের আসবাবপত্রে ময়লা জমে বেশী।

চলুন, জেনে নিই , এ সময় সহজে কীভাবে আপনার আসবাবের যত্ম নিবেন –

* প্রতিদিন খাবার ঘরে নানা ধরনের আসবাব ব্যবহার হচ্ছে এবং ঘরের শোভা বর্ধন করছে। এগুলোর উপর সহজে ধুলা-ময়লা যেন জমতে না পারে, সে জন্য নরম পাতলা গেঞ্জি কাপড় বা পুরনো কাপড়ের পরিষ্কার নরম টুকরা দিয়ে সব আসবাবপত্র মুছে নিন। তবে পানি লাগাবেন না।

* কাঠের আসবাবপত্রের ধুলা পরিষ্কার করার পর অ্যান্টিসেপটিক ক্রীম এবং বাজারে পাওয়া যায় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের লিকুইড লোশন তুলা বা ওয়েট টিস্যুতে লাগিয়ে ভালো করে মুছে নিন। দেখবেন, আপনার আসবাবপত্রের উজ্জ্বলতা কেমন বেড়ে গেছে।

* কাঠের ছোট আসবাবপত্রে নকশা বা ছোট ছোট কোনার ভাগগুলোতে অনেক ময়লা জমে। সেজন্য পুরনো রঙ করার ব্রাশ বা মোটা তুলি দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। তা না হলে ওইসব স্থানে পোকামাকড় বাসা বাঁধবে এবং আসবাব নষ্ট হয়ে সৌন্দর্য্য ম্লান হয়ে যাবে।

* মনে রাখবেন, দামী আসবাব যেন আপনার অবহেলা ও সামান্য যতেœর অভাবে নষ্ট হয়ে না যায়।

* আজকাল বসার ঘর, শোবার ঘর ও বারান্দায় বসার আসবাবপত্রে ফোম এবং কোন কোন বাসায় মাটিতে ডিভাইন বিছিয়ে রাখে। এসব আসবাবের কভার সপ্তাহে একদিন ধুয়ে পরিষ্কার করা ভালো এবং প্রতিদিন ব্রাশ বা ঝাড়– দিয়ে ঝেড়ে অথবা ভ্যাকুয়াম কিনার দিয়ে ওয়াশ করলে ধুলা-ময়লা চলে যায়। ভ্যাকুয়াম কিনার দিয়ে ঘরের দরজা, জানালার পর্দা ও সঙ্গে সঙ্গে মেঝে পরিষ্কার করে নিলে বিছা, মাকড়ের জাল, ধুলাবালি প্রভৃতি জমতে পারে না।

* কাচের আসবাব এখন সব বাসাতেই ব্যবহার করা হচ্ছে। এগুলো পরিষ্কার কাপড় বা নধনু রিঢ়বং অথবা রিহফড়ষরহ লিকুইড ক্রীম তুলা বা নিটিং কাপড়ের ওপর লাগিয়ে ওই কাপড় দিয়ে প্রতিদিন একবার করে মুছে নিলে দেখতে চকচকে মনে হবে এবং জীবাণু ও ধুলা-ময়লা চলে যাবে।

* অনেক সময় নিউজ পেপার পানিতে ভিজিয়ে তা কাঁচের আসবাবপত্র বা আয়নায় ৫ মিনিট লাগিয়ে রেখে পরে নরম রুমাল বা তোয়ালের টুকরো দিয়ে মুছে নিলে পরিষ্কার ও স্বচ্ছ মনে হবে।

* কাচের আসবাবপত্রের সূক্ষ্ম স্থানে পাতলা কাপড় কাঠিতে জড়িয়ে নিয়ে সেই কাঠি দিয়ে মুড়িয়ে পরিষ্কার করলে ধুলা-ময়লা চলে যাবে।

* লোহা ও স্টিলের আসবাব নিত্য ব্যবহারের আসবাবপত্রের মধ্যে অন্যতম। তবে আজকাল উডপাই ও প্লাস্টিকের আসবাবপত্রও প্রায় ঘরে দেখা যায়। এসব আসবাব খুব সহজে নরম পাতলা কাপড় দিয়ে মুছে নিলেই প্রতিদিন ধুলা-ময়লা জমার স্থানই পায় না। তবে মাঝে মধ্যেই লিকুইড লোশন তুলায় লাগিয়ে এ ধরনের আসবাব পরিষ্কার করলে নতুনের মতো মনে হয়।

* অনেক সময় প্লাস্টিকের আসবাবপত্র হালকা পালকপত্র বা ফুলের ঝাড়– অথবা পানি দিয়ে ভেজানো নরম তোয়ালে দিয়ে মুছে নিলে সুন্দর পরিষ্কার হয়ে যায়।

* কাপড়ের তৈরি আসবাবপত্র যেমন –  ইজি চেয়ার, মোড়া, বাগানে বসার চেয়ার প্রভৃতি সপ্তাহে একদিন আসবাব থেকে খুলে হালকা নরম পানিতে ডিটারজেন্ট পাউডার ও এক চামচ ভিনেগার দিয়ে ভিজিয়ে রেখে পরে ব্রাশ দিয়ে অথবা হাতে কেচে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে সেভলন বা ডেটলের ফোঁটা মেশানো পানিতে ডুবিয়ে পানি ঝড়িয়ে শুকাতে দিন। শুকালে ইস্ত্রি করে আসবাবে লাগিয়ে রাখুন। দেখবেন, ধুলা-ময়লা ও রোগজীবাণু আপনার পরিবারের কারো শরীরে প্রবেশ করতে পারবে না।

তবে ভ্যাকুয়াম কিনার দিয়েও পরিষ্কার করে নিতে পারেন। প্রয়োজনে মোটা ভারী কভারগুলো লন্ড্রিতে দিয়ে সময় ও কষ্ট কমাতে পারেন।

আসলে ঘরের বা ঘরে ব্যবহƒত সব আসবাবপত্র পরিচর্যার প্রধান কারণ হলো, পরিবারের সবাই যেন রোগ-জীবানুর হাত থেকে নিরাপদে থাকে। তাই ঘরের প্রতিটি আসবাব যদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে, তাহলে আপনার মন ভালো থাকবে এবং আপনার পরিবার হবে জীবানুর হাত থেকে মুক্ত। আর সুন্দর স্বাস্থ্যকর পরিবেশ সবারই কাম্য। হোক ছোট বা বড়, ঘরের আসবাবপত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা যে কোন পরিবেশকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলে নিমেষে।

 

Related posts

One Thought to “গার্হস্থ্য প্রণালী ::::: মে – ’১২

  1. Alihusen

    Always a good job right here. Keep rloilng on through.

Leave a Comment