ভালবাসার গল্প : অব্যক্ত ভালোবাসা

ধীরে ধীরে সূর্যের আভা দেখা যাচ্ছে । সূর্যের উদয় বার্তা যেন গান গেয়ে যাচ্ছে । প্রকৃতির নিয়ম । পার্থক্য শুধু মেঘলা আকাশে আঁধার ঘনালে,কিংবা শীতের কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়লে সূর্যের দেখা পাওয়া যায় না । আমার জীবনটাও যেন ঠিক তেমন সরল ছকে বাঁধা । নিরষ একজন মানুষ । প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে ঝিম মেরে পড়ে থাকা । লেখাপড়া,ভবিষ্যত নিয়ে কোনো চিন্তা নেই । এই অসুখ তো আমার চিরদিনের না । অল্প কিছুদিনের । মরণব্যাধির অসুখ । তিলে তিলে মৃত্যু ঘটতে পারে । অনেকে বেঁচেও আসে এই মৃত্যুর দুয়ার থেকে । ছোটবেলা থেকে সাদামাটা জীবনের মধ্যে দিয়ে জীবন পাড় করেছি । চারিদিকের নানা রঙের মাঝে চোখ ঝলসায় নি কোনদিন । হঠাৎ একটি রঙিন ছবি মনে গেঁথে গেল । জীবনের প্রতিটি মূহুর্ত রঙে ভরে উঠল । একটি মায়াবী মুখ,মায়াবী চোখের চাহনী আর তার মাঝে লুকিয়ে থাকা এক নীরব চঞ্চল মন দেখে মনে নাড়া দিয়ে উঠল । তন্দ্রা নামের সেই মেয়ে আজ আমায় পুরোপুরি মোহবিষ্ট করে রাখে । তার সুন্দর কন্ঠ শুনবার তাগিদে বার বার তাকে কল করার ইচ্ছা নেশার মত হয়ে দাড়িয়েছে । মনে পড়ে প্রথম দেখার কথা । হাসিখুশি চেহারা । যা হৃদয়ে রক্তক্ষরণ করে দিয়ে যায় । সেদিন ছিল তার জন্মদিন । গোলাপী রঙের জামা পড়েছিল সেদিন । যেন গোলাপি রঙের কোনো ফুল । যার চোখের চাহনী তীরের মত বিদ্ধ করে প্রতিটি মূহুর্তে । জন্মদিন থেকে ফিরে ওকে নিয়ে ভাবনা শুরু । এক সময় নিজের অজান্তে ভালোবেসে ফেলা তাকে । তার মায়াবী চোখ,ঠোঁটের সেই হাসি কোনোমতেই পিছু ছাড়ছে না । রাকিব কে জানাই এ ব্যাপারে । রাকিব বলে উঠে, "শোভন মামু, তুমি তো প্রেমে পড়ছো । এইটাও বুঝো নাই । কইয়া ফালাও মনের কথা । বলতে চাই আমি । কিন্তু পারিনা । তোমার নীরবতা আমাকে আরও নীরব করে । তোমার মায়াবী চোখের পানে তাকালে আমার কথা এলোমেলো হয়ে যায় । যতবার বলতে চাই,ততবার এক অজানা আতঙ্কে ভুগি । পারি না কেন? মোবাইল বার বার দেখি । তোমাকে কল করি । মেসেজ দেই । তুমি কি কিছুই বুঝো না । দেখতে দেখতে বৃষ্টি নামে । চারিদিকে আঁধার ঘনিয়ে আসে । কিছুতে মন বসে না । বারান্দাতে বসে হাত বাড়িয়ে দেয় শোভন ছুঁয়ে দেখে বৃষ্টি । তন্দ্রাও কি এখন বৃষ্টি ছুয়ে দেখছে? 'শোভন কি আমায় ভালোবাসে? ওর কিছুদিনের ব্যবহারে মনে হয় আমাকে কিছু বুঝাতে চাইছে ।' বারান্দায় দাড়িয়ে বৃষ্টি দেখতে দেখতে ভেবে চলেছে তন্দ্রা । ফোঁটা বৃষ্টির ছোঁয়া নরম গাল ছুঁয়ে দিয়ে যাচ্ছে । আনমনে ভেবে চলে তন্দ্রা । 'শোভন কেন বন্ধুত্বকে অপমানিত করবে? কত ভালো বন্ধুত্ব আমাদের ' বৃষ্টির ছোঁয়া দুজনকেই সিক্ত করে যায় । মোবাইলের রিংটোন বেজে চলেছে শোভনের । খেয়াল নেই । তার ভাবনা এখন গভীরে । রাতে মোবাইল চেক করে দেখে অনেকগুলো মিসড কল । তন্দ্রার । কল ব্যাক করে । 'হ্যালো তন্দ্রা বল,ব্যস্ত ছিলাম কল ধরতে পারি নি ।' 'কাল দেখা করতে পারবি?' 'কোথায়?' 'যেখানে বলবে ।' ভয়ানক অসুখ শোভনের । ভালোবাসার । তন্দ্রার প্রতি ভালোবাসা । এটাই অসুখ । এই অসুখ কোনোদিনও যাবে না । পাশাপাশি বসে দুজন । চারিদিকে পাখির ডাক,গোলাপের সুবাস । এক মধুর পরিবেশ । বিন্দু ঘাম জমেছে কপালে । হঠাৎ তন্দ্রা বলে উঠে, "আজ তোকে কেন ডেকেছি জানিস?" মাথা নেড়ে না বলে শোভন । অনেকক্ষণ নীরব থাকে দুজন । শুধু পাখির কলতান । "তুই কি আমাকে ভালোবাসিস?" তন্দ্রা প্রশ্ন করে । "হুম" "বলিস নি কেনো কোনোদিন?" "ভয় করে ।" হঠাৎ তন্দ্রাকে অচেনা মনে হয় । কি করবে বুঝতে পারে না শোভন । "ভালো থাকিস । আমাদের বন্ধুত্ব এখানেই শেষ । নিজের যত্ন নিবি ।" উঠে যায় তন্দ্রা । শোভন তাকিয়ে থাকে তন্দ্রার চলে যাবার দিকে । ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায় দূরে । চারিদিকে কেমন যেন আঁধার ঘনিয়ে এসেছে । বেদনার সুরধ্বনি বাজছে । একাকীত্ব আঁকড়ে ধরেছে । হারানোর বেদনায় পাখির মধুর ডাকগুলো করুণ লাগছে । রাত ১১টা ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিতে ইচ্ছে করছে শোভনের । দিয়েই কি লাভ? সব আজ অর্থহীন । কষ্টে পাথর হয়ে গিয়েছে যেন । ওয়ালে একটা পোষ্ট । "ইনবক্ষ চেক কর" ইনবক্সে মেসেজ পড়তে থাকে, "তোকে অনেক ভালো বন্ধু ভাবতাম । খুব কাছের । এটা কি করলি তুই? আমি জানি আমাদের মাঝে এই ভালো বন্ধুত্বটা আর থাকবে না । তাই আজ বন্ধুত্বটা এখানেই শেষ করে দিয়েছি । কারণ আজ থেকে আমাদের মাঝে বন্ধুত্ব নামক গলার কাঁটা আর থাকবে না । আজ থেকে আমাদের ভালোবাসার সম্পর্ক শুরু । ভালোবাসি তোকে । তোর তন্দ্রা ।" কি বলবে বুঝতে পারে না শোভন । শুধু চোখ দিয়ে দুফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে চলে । আজ কাঁদতে চায় শোভন । - কাজী ফরিদুল হাসান শাওন

ধীরে ধীরে সূর্যের আভা দেখা যাচ্ছে । সূর্যের উদয় বার্তা যেন গান গেয়ে যাচ্ছে । প্রকৃতির নিয়ম । পার্থক্য শুধু মেঘলা আকাশে আঁধার ঘনালে,কিংবা শীতের কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়লে সূর্যের দেখা পাওয়া যায় না । আমার জীবনটাও যেন ঠিক তেমন সরল ছকে বাঁধা । নিরষ একজন মানুষ । প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে ঝিম মেরে পড়ে থাকা । লেখাপড়া,ভবিষ্যত নিয়ে কোনো চিন্তা নেই । এই অসুখ তো আমার চিরদিনের না । অল্প কিছুদিনের । মরণব্যাধির অসুখ । তিলে তিলে মৃত্যু ঘটতে পারে । অনেকে বেঁচেও আসে এই মৃত্যুর দুয়ার থেকে ।…

Read More

ভূতের গল্প : ভুতুরে বাড়ি !

পৃথিবীর অন্যতম প্রসিদ্ধ ভূতুড়ে একটা বাড়ির কথা জানাবো আজ আপনাদের। বাড়িটি চিনের হুয়াং হু প্রদেশে। বিশাল একটি বাড়ি কিন্তু খালি পড়ে আছে গত প্রায় ২ যুগ ধরে। কারণ কি? সেই আদি এবং অদ্ভুত কারণ! বাড়িতে নাকি ভূতের আনাগোনা দেখা যায়। বাড়িটি সম্পর্কে প্রচলিত কিছু ঘটনা এরকমঃ ===>গোল চিহ্নিত নিচের ডান পাশের দুটো জানালা দেখতে পাচ্ছেন? রাতে নাকি প্রায়ই এই জানালায় একটা নীল পোশাক পড়া মেয়েকে দেখা যায়। অনেকেই দেখেছেন মেয়েটিকে। বেশিরভাগ মানুষই বলেছেন মেয়েটিকে যখন দেখা যায় তখন বাড়িটির চারপাশে খুব ঝড়ো হাওয়া বইতে থাকে। ===>বাড়ির বাসিন্দারা (যারা আগে থাকতেন) তাদের মধ্যে অনেকেই গভীর রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ার পর দেখেছেন তাদের পাশে বিছানায় ডেড বডি পড়ে আছে। বাড়িটিতে থাকাকালীন সময়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এবং আত্মহত্যা করে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা ৮জন (স্থানীয়দের মতে আরো অনেক বেশি)। ===>ছবির বাম পাশে দোতালায় গোল করে লাল কালি দেয়া জায়গায় একটা বৃদ্ধাকে দেখা যায় সাদা কাপড় পরিহিত অবস্থায়। তবে এই বৃদ্ধার কথা একেকজন একেক রকম বলেন। কেউ বলেন সে এই জানালার পাশে দাঁড়িয়ে হাসতে থাকেন। অনেকে বলেন বৃদ্ধাটি চুল নাকি দোতালা থেকে মাটি পর্যন্ত গড়ায়। ===>বাড়িটার ঠিক পেছনে একটা মজা পুকুর আছে যেখানে রাতের বেলা আলোর খেলা দেখা যায়। বিচিত্র সব রঙের আলো মনে হয় পুরো পুকুরটা জুড়ে নেচে বেড়ায়। এখনো আবিষ্কার করা যায় নি বাড়িটার এমন আচরণের কারণ কি।কেউ বলে খারাপ আত্মা, কেউ বলে অভিশাপ। এই বাড়িটির রহস্য এখন পর্যন্ত উদঘাটন করা সম্ভব হয় নি !

  পৃথিবীর অন্যতম প্রসিদ্ধ ভূতুড়ে একটা বাড়ির কথা জানাবো আজ আপনাদের। বাড়িটি চিনের হুয়াং হু প্রদেশে। বিশাল একটি বাড়ি কিন্তু খালি পড়ে আছে গত প্রায় ২ যুগ ধরে। কারণ কি? সেই আদি এবং অদ্ভুত কারণ! বাড়িতে নাকি ভূতের আনাগোনা দেখা যায়। বাড়িটি সম্পর্কে প্রচলিত কিছু ঘটনা এরকমঃ ===>গোল চিহ্নিত নিচের ডান পাশের দুটো জানালা দেখতে পাচ্ছেন? রাতে নাকি প্রায়ই এই জানালায় একটা নীল পোশাক পড়া মেয়েকে দেখা যায়। অনেকেই দেখেছেন মেয়েটিকে। বেশিরভাগ মানুষই বলেছেন মেয়েটিকে যখন দেখা যায় তখন বাড়িটির চারপাশে খুব ঝড়ো হাওয়া বইতে থাকে। ===>বাড়ির বাসিন্দারা (যারা আগে…

Read More

ভূতের গল্প : ভয়ানক একটি পিশাচ ঘটনা

ঘটনাটা বরিশালের ,বাউফল থানার মুলাদি গ্রামের! ঘটনাটা ৪০বছর আগের! আমার এক নিকট আত্বীয়ের ঘটনা ও তারকাছ থেকে শোনা! তার ভাষায়! আমার বয়স তখন ২২বছর ! আমার বাবার খুবই ডায়রিয়া হয়েছিল!গ্রামের এক কবিরাজকে দেখিয়েছি এবং সে বলে না'যত তারাতারি সম্ভভ শহরে নিয়ে ভাল ডাক্তার দেখাতে!কারন তখনকার দিনে গ্রামের দিকে কোন ডাক্তার ছিল না! আর শহর ২৫কিঃ মিঃ দূরে! শহরে যেতে হবে নৌকায়করে! যোগাযোগে একমাএ উপায় ছিল নদীপথ! ভাল রাস্তা তখন ছিল না! বাবাকে নিয়ে যখন রওনা করি তখন বেলা ১২ বাজে! প্রথমে আকাবাকা ছোট খাল পেরিয়ে বড় নদী ও তার ঐ পাড়ে শহর! শহরে পৌছাতে আরো ঘন্টা আডাঁই লেগেছে! বিকাল ৫টার দিকে বাবা মারা যায়! বাবার লাশটা নিয়ে আমি আবারবাড়ির দিকে রওনা দেই!বড় নদীটা যখন পার করে খালের দিকে নৌকাঢূকাই তখন দেখতে পাই নৌকা আর চলছে না'কাঁদায় আটকে গিয়েছে! তখন ভাটা চলছে! জোয়ার আসবে রাত ১২টার দিকে!তখন সময়টা আনুমানিক সন্ধা সাডে ৬টা হবে! শীতেরকাল থাকায় ঐ সময়ে অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল চারপাশ! আকাশের জোত্নার আলো ছিল খুব! জনমানব শূন্ন একটি স্থানে এসে নৌকাটা আর চলছে না! খালটার বামপাশে একটু দূরে একটি পরিতেক্ত শ্বশান আর ডানপাশে গভীর জঙ্গল!জঙ্গলের বটগাছ গুলে দানবের মত দাড়িয়ে আছে! বটগাছের ডালে কিছু বাদুরঝুলে আছে!এতটাই নির্জন জায়গায় যে কোন শব্দ হলেই বুকের ভিতরে কেমন যেন করে ওঠে!ভয়ে বাবার লাশটা স্পর্শ করে বাবার পাশে বসে থাকি!শুধু অপেহ্মা ছাড়া আর কোন উপায় নেই! একটা চাদর দিয়ে বাবার লাসটা ঢেকেদিয়েছি!রাত যত বাডতে থাকে ভয় ততটাইতীর্বরোহতে থাকে! মনে হয় জঙ্গল থেকে কিছু একটা বেডিয় এসে আমাকে ধরবে ! হটাত্ নৌকাটা কেমন যেন একটু দুলে উঠলে মনে হল আমার মৃতবাবা নাডে উঠছে! বাবার ঠান্ডা শরির থেকে হাতটা সরিয়ে নেই! দোয়া যতটুকুপাড়ি সবই পড়তে চেষ্টা করছি কিন্ত ভয়ে কিছুই মনে নেই! ইচ্ছা করছিল চিত্কার করি বাচাঁও বাচাঁও বলে!কিন্তু আমি জানি আমার এই চিত্কার কারো কানে পৌছাবেনা! না পারছি এখান থেকে যেতে,না পারছি থাকতে! নিজের মৃতবাবাকেও ভয় করছে! আনুমানিক রাত ১১টার দিকে একটা ছায়া দেখতে পেলাম বট গাছের অড়াল থেকে বেডিয়ে আমাদের নৌকার কাছে আসলো ও আমাকে জিঙ্গাসা করলো'তুমি কিঐ দিকে যাবা ?লোকটি একটা চাদর গায়ে জড়িয়ে আছে ও তার মুখটা চাদরে ডাকা ছিল! লোকটি ইশারায় যে দিকে দেখালো ঐ দিকেই আমরা যাচ্ছি! লোকটিকে বললাম জোয়ার আসলে যাব! লোকটি নৌকায় উঠলো ও বাবার কাছে বসলো কিন্তু বাবার সম্পর্কে কিছুই জিঙ্গাসা করলো না! একদৃষ্টিতে বাবার লাশটার দিকে চেয়ে ছিল! লোকটার মুখটা আমি তখনো দেখতেপাই নি! এই গহীনজঙ্গলে এতরাতে তার আগমনের কারনটা পর্যন্তে জানতে ইচ্ছা করে আগমনে শস্তি পেয়েছি! রাত ১২টার দিকে জোয়ার আসলে আমি নৌকাটা চালাতেশুরু করি! নৌকাযত সামনের দিকে যাচ্ছে ততই একটা গন্ধ নাকে লাগছে! ধিরে ধিরে গন্ধের তীবরোতা বাড়তে থাকে!কিছু কচুরিপনা , কলাগাছ ও মরা একটাগরুর ফুলে থাকা দেহ একসাথে জটলা করে এমনভাবে নৌকা সাথে আটকে আছে যে আমি অনেক চেষ্টা করে ও নৌকাটাকে কিছুতেই সামনের দিকে নিতে পারছিনা! বাদধো হয়ে আমি নৌকা থেকে পানিত রশি ধরে টানতে থাকলাম !প্রায় ৫ মিনিট টানার পর আমি নৌকার কাছে আসি ! তখন যা দেখলাম বুকের ভিতর কেমন যেন করে উঠলো!দেখি লোকটাবাবার বুকেরকাছে বসে বারার বুকের ভিতর হাত ঢুকিয়ে দিয়ে কলজাটা বেরকরে নিয় তখন আমি কোন উপায় না দেখে বৈঠাটা হাতেনিয়ে লোকট মাথায় আঘাতকরি একাধিক বার! লোকটা আমার দিকে যখন ঘুড়ে তখন ঠিক গলার মাঝখানে বৈঠাটা ঢুকিয়ে দেই ! এতে লোকটা পানিতে পড়ে যায়! আমি পানিতে খুব জোরে জোরে বৈঠাদিয়ে আঘাত করি ও চিত্কার করি সাহষ থাকলে সামনে আয়!চাঁদের আলোতে লোকটার রক্তমাখা লোমশ হাতটা দেখেছিলাম !বড়বড় নখ ও কোঠরে ঢোকানো চোখের নীল আভা মনে পড়লে বুকটা শুকিয়ে যায়! দাতগুলো লালচে খুব ছোট ছোট তীখ্ন আর ধারালো! আমার চিত্কার শুনে টর্চলাইট নিয়ে কয়েকজন লোক ছুটে আসে তাদের সব কিছু খুলে বলি ! সব কিছু শুনে তারা বাবার লাশটা দেখে'তখন ও বাবার বুকের ছোপ ছোপ রক্তগুলো শুকায়নি! ঐ রাতটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর রাত!যেরাতের কথা আমি কখনো ভুলতে পারবো না! ঐটা ছিল একটা পিশাচ !

ঘটনাটা বরিশালের ,বাউফল থানার মুলাদি গ্রামের! ঘটনাটা ৪০বছর আগের! আমার এক নিকট আত্বীয়ের ঘটনা ও তারকাছ থেকে শোনা! তার ভাষায়! আমার বয়স তখন ২২বছর ! আমার বাবার খুবই ডায়রিয়া হয়েছিল!গ্রামের এক কবিরাজকে দেখিয়েছি এবং সে বলে না’যত তারাতারি সম্ভভ শহরে নিয়ে ভাল ডাক্তার দেখাতে!কারন তখনকার দিনে গ্রামের দিকে কোন ডাক্তার ছিল না! আর শহর ২৫কিঃ মিঃ দূরে! শহরে যেতে হবে নৌকায়করে! যোগাযোগে একমাএ উপায় ছিল নদীপথ! ভাল রাস্তা তখন ছিল না! বাবাকে নিয়ে যখন রওনা করি তখন বেলা ১২ বাজে! প্রথমে আকাবাকা ছোট খাল পেরিয়ে বড় নদী ও তার ঐ…

Read More

ভালবাসার গল্প : ভালবাসার বৃষ্টি “২”

ছোট্ট আদৃতার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সেঁজুতি। কি নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে।অথচ ঘুমানোর আগে কত শত বায়না তার। আর রাজ্যের সব বায়না গল্প নিয়ে। আজ পরীর দেশের গল্প তো কাল বাঘের গল্প,নয়তো নিজের ছোটবেলার গল্প কিংবা সেঁজুতির ছোটবেলার গল্প।গল্প বলতে বলতে সেঁজুতির দুচোখের পাতা যখন ভারি হয়ে যায়,আদৃতা অস্ফুট স্বরে বলে উঠে, ......"তুমিতো স্লিপিং বিউটি হয়ে গেলে মা।" ......"মার আজকে খুব ঘুম পাচ্ছে সোনা।আজ ঘুমোও,আরেকদিন বলব।" ......"না না মা আজ তোমার ছোটবেলার গল্প বলবে বলেছিলে।" চোখের পাতা টানটান করে হলেও গল্প বলতে হয় সেঁজুতির। গল্প শোনার ফাঁকে ফাঁকে আদৃতা বলতে থাকে, ......"মা ঐযে ঐ গল্পটা বলনা,একদিন লাটিম খেলতে খেলতে মামা তোমার পায়ে লাটিম ছুঁড়ে দেয়। তুমি যে কত্ত ব্যাথা পেয়েছিলে। তারপর তুমি মামার সাথে দুদিনের আড়ি নিয়েছিলে।কিভাবে ভাব হয়েছিলে মা?" ......"অত কিছু কি আর মনে আছেরে?" ......"উহ,আছেতো মনে।তোমাকে একটা চকলেট দিয়ে ভাব নিয়েছে।" ......"তুমিই তো সব বললে,আবার শুনতে চাও কেন?" ......"আচ্ছা তাহলে ঐটা বল,তোমাকে একটা হাওয়াই মিঠাই কিনে দিয়ে তোমার সব জমানো টাকা আর মার্বেল নিয়ে যেত যে।" আদৃতার চুলে বিলি কেটে দিতে দিতে শুরু করে নতুন গল্প। গল্প বলার যোগারপাতি না করতে করতে ঘুমিয়ে পড়বে ও। জীবনটা যদি গল্পের মত হত কি অমন ক্ষতি হত। স্মৃতি হাতড়ে চলে যাই সুদূর অতীতে।কোথায় যেন যেয়ে থমকে দাঁড়াতে হয়। শেষ যেদিন বৃষ্টিতে ভিজেছিলাম সেদিন নাকি হঠাৎ থমকে যাওয়া কোন এক কাঁকডাকা ভোরে। জীবনটা এত সাজানো না বলেই হয়তো অনেক কিছু বুঝে উঠার বয়সে পা দেওয়ার আগে নেমে আসে প্রথম ঝড়। কোন এক সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বাবা বিরস মুখে বসে আছে আর পুরো বাড়ি ফাঁকা। মা আর ভাইয়ার কোন হদিস নেই। কাঁদতে কাঁদতে বাবার কাছে ছুটে যেতেই বাবা মাথায় হাত রেখে বলে, ......."মায়ের জন্য কাঁদছ মামনি? তোমার মা কদিনের জন্য নানুবাড়ি গেছে। কয়েকদিন পরই চলে আসবে।" ......." ভাইয়া কোথায় গিয়েছে বাবা" ......"ও তোমার মায়ের সাথে গিয়েছে। বলেছিতো চলে আসবে।" গলার আওয়াজ আরও এক কাঠি উঠিয়ে আরও জোরে কেঁদে উঠে বলি। ....."আমাকে না নিয়ে কেন গেল?" চুপ হয়ে যায় বাবা।বুঝিনি তখন আর বলার কিছুই ছিলনা। এরপর থেকে শুধু দিন গোনা। অপেক্ষা শুধু অপেক্ষা হয়েই থাকত। ধীরে ধীরে বাস্তবতার বেড়াজালে নিজেকে আবিষ্কার করলাম। বাবা-মার ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর,ভাইয়া আর মাকে ছাড়া একেকটা দিন যেন বিষবাষ্পের মত ধোঁয়া ছড়াত। আমি ছিলাম ভাইয়া বলতে অন্তঃপ্রান। সারাদিন দুজন আঠার মত লেগে থাকতাম। কখনও ভাইয়া আমার সঙ্গী হত রান্নাবাটি খেলায় কিংবা আমি ভাইয়ার সাথে ব্যাট-বল নিয়ে দৌড়াতাম। মনে পড়ে,একবার খেলতে যেয়ে ভাইয়া মায়ের শোকেসের কাঁচ ভেঙ্গে ফেলে আর কপালে জোটে মায়ের হাতে মার। আর আমার সেকি কান্না। সারাদিন কিছু খাইনি,রাতে এলো ভীষণ জ্বর। জ্বরের ঘোরে নাকি বকছিলাম, "মা,ভাইয়াকে আর মেরোনা।" সেইযে জ্বর আর নামার নাম নেই। মায়ের সাথে ভাইয়াও সারারাত বসে ছিল। একটু পরপর কপালে হাত দিয়ে দেখছিল। এগুলো এখন শুধুই স্মৃতি। প্রায় দশ বছর ওদের থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম। কতভাবেইনা খোঁজ করার চেষ্টা করেছিলাম। প্রতিদিন তীর্থের কাঁকের মত অপেক্ষা করতাম,কোন এক ভোরে যেমন আমার জীবন থেকে বিলিন হয়ে গিয়েছিল তেমনি আরেক ভোর হয়তো আমার জন্য মঙ্গল প্রদীপ হয়ে জ্বলবে। কিন্তু অপেক্ষার প্রহর আর শেষ হতোনা। কেমন যেন ঘরকুনো হয়ে গিয়েছিলাম আমি। অনেকটা আসামাজিকের মত। সোশ্যাল নেটওয়ারকিং সাইটগুলোও যেন ছিলনা আমার জন্য। মাঝে মাঝে মুখবইতে ভাইয়ার নাম লিখে খুঁজতাম। কখনও পুরো নাম,কখনওবা নামের একাংশ। খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত হয়ে অনেকটা অভিমানী হয়ে যেতাম। হঠাৎ একদিন দেখি ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টের খাতায় একটা নাম আটকে আছে। আহনাফ আহমেদ। ভাইয়ার নাম আহনাফ কবির দীপ। বাবার নামের অংশটুকু বদলে ফেলে নতুন নাম দিয়েছে নাকি অন্য কারো নাম বুঝতে পারছিলামনা। তবুও ভস্মীভূত ছাই থেকে জেগে উঠা ফিনিক্স পাখির মত আশা জেগে উঠেছিল মনে। বন্ধু খাতায় নামটা টুকে নেওয়ার একটু পর পর মুখবইয়ে ঢু মারতাম।নিজ থেকে কিছু বলতেও পারছিলাম না। অপরিচিত মানুষের সাথে নিজ থেকে কথা বলার বাতিক নেই। ঠিক একদিন পর একটা ম্যাসেজ এলো, "কেমন আছিস বুড়ি?" কয়েক মিনিট শুধু শব্দগুলোর দিকে তাকিয়ে ছিলাম।চোখের পাতা তিরতির করে কাঁপছিল।মনে হচ্ছিল পুরো পৃথিবীটা মাথার উপর ভনভন করে ঘুরছে। কি করব না করব কিচ্ছু ভেবে পাচ্ছিলাম না।সব রকম কাঁপাকাঁপি,ঝাপাঝাপির পর অভিমানের ঝাঁপি খুলে বসেছিলাম। ভাইয়া নির্বিকারভাবে সব কথার জবাব দিচ্ছিল যেন সব দোষ মাথা পেতে নিয়েছে। আত্মপক্ষ সমর্থনটুকু পর্যন্ত করার নেই। তারপর ভাইয়াকে মুঠোফোনে করেছিলাম বন্দী। কত যে কথা। " তুই দেখতে কেমন হয়েছিস? আগের মতো রোগা পটকা আছিস? হাতে গলায় শিকল ঝুলিয়ে ঘুরিস?ঠোঁটের নিচে স্টাইল করে দাড়ি রাখিস? কত লম্বা হয়েছিস তুই? কোথায় থাকিস কিসে পড়িস?" মাকে নিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে হাজার কথা। ......" তোর একটা ছবি দিসতো।" ......" ছবি দিব কিরে, দেখা-ই করব বুড়ি।" ......" সত্যি দেখা করবি? তুই আমাকে চিনতে পারবি?" ......" পাগলি একটা। তুই বুঝি হাতিমার্কা মোটা হয়ে গেছিস? " ......" হুম, ছাই হয়েছি।" তারপর যেন সময়গুলো কাটছিলইনা। সেকেন্ডের হিসেব কষছিলাম সারাক্ষণ। অবশেষে যেদিন দেখা হবে বলেছিল, ঠিক সময়ে জায়গামত যেয়ে বসে ছিলাম।তখন আর ভাইয়ার আসার নাম নেই। কখন থেকে অপেক্ষা করছিলাম। ভাইয়া কি আগের মতো আছে নাকি গালভাঙ্গা মফিজের মতো হয়েছে।কত কিযে ভাবছিলাম।এরমাঝে আবার পাশের টেবিলে একজোড়া ছেলেমেয়ের কুটকুট হাসির শব্দ কানে এসে লাগছিল। বসে বসে ভাবছিলাম ভাইয়া কি এখনও আগের মতো প্রান খুলে হাসে, হাসলে কি টোলটা আরও গভীর হয়ে জাগে।আবার হঠাৎ হঠাৎ মনে হচ্ছিল পায়ের নিচে ষোল বাই ষোল টাইলসগুলো দুলে উঠছে। ভাইয়া কি ঠকঠক শব্দ করে মাটি কাঁপিয়ে আসবে নাকি সন্তর্পণে পাশে এসে বসবে।এরপর হঠাৎ খুব চিরচেনা একটা ঘ্রান পেয়ে চমকে উঠেছিলাম।ঘুরে দেখলাম আলুঝালু চুলের নীলরঙ্গা শার্ট পরা খুব চেনা একটা মুখ। যেন মনে হল সাক্ষাত রাজপুত্র। ভাইয়াটাকে দেবদূতের মতো লাগছিল। তারপর ভাইয়া যখন আমার পাশে এসে বসল, আমি শুধু ওকে দেখছিলাম। আমার মুখ থেকে কোন কথা সরেনা। দুজনে চুপ করে ছিলাম,যেন নির্বাক চলচিত্র।নিরবতা ভেঙ্গে ভাইয়াই কথা বলেছিল কিন্তু কেমন জানি দূরের মানুষের মতো। পুরনো কাসুন্দি ঘেঁটেঘুঁটে ছাইপাঁশ বলছিল। আর আমি চোখরাঙ্গা করে ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম। ..."বাব্বা আগের মতই অভিমানী আছিস,আইসক্রিম খাবি বুড়ি?" ..."তুই কি ভেবেছিস তুই-ই শুধু বদলে মহামানব হয়ে গেছিস?আর আমি আগের মত বুদ্ধু আছি,আমাকে রাগিয়ে তারপর আইসক্রিম দিলেই গলে যাব।" ..."এত রাগিসনা বুড়ি,তোকে পেত্নির মত লাগছে।দেখি তোর গালটা একটু টেনে দেই।শোন বুড়ি,,।" ..."হুম,বল।" ..."এ কদিন ধরে কথা বলছি,একবার ও তো ভাইয়া বলে ডাকলিনারে।" কথাটা শুনেই কেঁপে উঠলাম,কিচ্ছু বলতে পারছিলামনা শুধু দুচোখ বেয়ে পানি পড়ছিল।আর কোন কিছু চিন্তা না করে ভাইয়াকে জাপটে ধরে হাউমাউ করে কান্না শুরু করেছিলাম।মনে হচ্ছিল ভাইয়ার বুকের মাঝে মান্নাদের সেই গানটা বাজছিল, "সে আমার ছোট বোন, বড় আদরের ছোট বোন।" আমি শুধু কেঁদেই যাচ্ছিলাম। আর ঠিক তখনই আমাদের ভালবাসার বৃষ্টি হয়ে এক পশলা বৃষ্টি নেমেছিল।আর ভাইয়া আমার হাত ধরে বলল, ..."টুনটুনি বাইরে তাকিয়ে দেখ ।বৃষ্টি নেমেছে,কেন জানিস?তোর অশ্রু ধুয়ে দিতে।চল ছোটবেলায় হারিয়ে যাই।" সেদিন ইচ্ছেমত ভিজেছিলাম দুজন।জীবনটা এক মুহূর্তের জন্য অসম্ভব সুন্দর হয়ে গিয়েছিল তখন। মনে হচ্ছিল আহারে এভাবে যদি সারাটাজীবন একসাথে থাকতে পারতাম। সেইযে শেষ বৃষ্টিতে ভেজা,ভাইয়াকে শেষ দেখা। মাঝে মাঝে দেখা হয় স্বপ্ন-দুঃস্বপ্নের মাঝামাঝি কিছু একটায়। আর আদৃতা যখন বলে উঠে , ......"মা আকাশের কোন তারাটা আমার মামা।" কোন তারাটা নিজেই জানিনা, শুধু আমার দিকে তাকিয়ে থাকা তারাটাকে খুঁজে বেড়াই। - ফারিয়া তানজিলা রিবন্তী

ছোট্ট আদৃতার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সেঁজুতি। কি নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে।অথচ ঘুমানোর আগে কত শত বায়না তার। আর রাজ্যের সব বায়না গল্প নিয়ে। আজ পরীর দেশের গল্প তো কাল বাঘের গল্প,নয়তো নিজের ছোটবেলার গল্প কিংবা সেঁজুতির ছোটবেলার গল্প।গল্প বলতে বলতে সেঁজুতির দুচোখের পাতা যখন ভারি হয়ে যায়,আদৃতা অস্ফুট স্বরে বলে উঠে, ……”তুমিতো স্লিপিং বিউটি হয়ে গেলে মা।” ……”মার আজকে খুব ঘুম পাচ্ছে সোনা।আজ ঘুমোও,আরেকদিন বলব।” ……”না না মা আজ তোমার ছোটবেলার গল্প বলবে বলেছিলে।” চোখের পাতা টানটান করে হলেও গল্প বলতে হয় সেঁজুতির। গল্প শোনার ফাঁকে ফাঁকে আদৃতা বলতে থাকে,…

Read More