জীবন জিজ্ঞাসা ও পরামর্শ

প্রশ্নঃ গোসলের পর পাত্রে যে অবশিষ্ট পানি থাকে, তা দিয়ে উযু করা জায়িয আছে কি- না?= মোঃ কফিল আহমদ, রামগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ।
উত্তরঃ গোসলের পর পাত্রে যে পানি অবশিষ্ট থাকে তা পাক। সুতরাং উক্ত পানি দ্বারা উযু-গোসল ইত্যাদি করা জায়িয আছে। [আদ্দুররুল মুখতার:১/১৮১, হিদায়া:১/৩৩ ও ৩৯]
প্রশ্নঃ অনিচ্ছাকৃতভাবে হাঁটুর লুঙ্গি উপরে উঠে গেলে উযু ভেঙ্গে যাবে কি-না? = শরীফ মাহমুদ, বাঞ্ছারামপুর, বি-বাড়িয়া।
উত্তরঃ এতে ফরয তরক হবে। কিন্তু কোন অবস্থায় এতে উযু ভাঙ্গবে না। কারণ, উযু ভঙ্গের নির্দিষ্ট কতগুলো কারণ আছে। যেমন- শরীর থেকে নাপাক বের হওয়া বা ঘুমানো ইত্যদি। সতর খুলে যাওয়া উযু ভঙ্গের কারণের মধ্যে পড়ে না।
প্রশ্নঃ রাত্রে ঘুমের মধ্যে স্বপ্নদোষের কারণে গোসল ফরয হয়ে গেছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে এত কম সময় আছে যে, যদি গোসল করতে যাই তাহলে ফজরের নামায কাযা হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। এমতাবস্থায় পরিধানের কাপড় পরিবর্তন করে তায়াম্মুম করে নামায পড়লে নামায হবে কি-না? = মাহমুদ, পাগাড়, টঙ্গী।
উত্তরঃ যদি কারো গোসল ফরয হয় এবং গোসল করতে তার শরয়ী কোন উজর না থাকে, যেমন মারাত্মক অসুস্থতা বা এক মাইলের মধ্যে পানি পাওয়া যায় না, তাহলে এমতাবস্থায় সে যে কোন স্থানেই থাকুক না কেন, তার জন্য গোসল করে নামায পড়া জরুরী। যদিও গোসল করলে নামায কাযা হয়ে যায়, তথাপি এ অবস্থায় তায়াম্মুম করে নামায পড়ার অনুমতি নেই। কারণ, এভাবে সে পাক হতে পারবে না। তাহলে নামায পড়বে কিভাবে?
বিঃ দ্রঃ মেহমানের জন্য গোসল করতে লজ্জা বা সংকোচ শরীয়তে উজর নয়। (হিদায়া:১/৩১)
প্রশ্নঃ (ক) নাপাক কাপড় ধৌত করার সময় সাবান ও পানি মিশ্রিত ছিটা শরীরে লাগলে শরীর নাপাক হবে কি?
(খ) ফরয গোসলের পর শরীরে যে পানি লেগে থাকে তা না মুছে কাপড় পরিধান করলে সে কাপড় নাপাক হবে কি? ফরয গোসল করার সময় শরীর থেকে পানির ছিটা কাপড়ে পড়লে তা নাপাক হবে কি?
= আব্দুশ শাকুর, জামালপুর।
উত্তরঃ (ক) যে সমস্ত কাপড় সম্পর্কে দৃঢ়ভাবে জানা যায় যে, কাপড়টি নাপাক। তবে ঐ কাপড় ধৌত করার সময় সাবানের পানি মিশ্রিত ছিটাগুলোও নাপাক হবে। তাই যে সমস্ত অঙ্গে উক্ত পানির ছিটা পড়বে, ঐ অঙ্গগুলো অবশ্যই ধৌত করে নিতে হবে। কারণ, অল্প পানির মধ্যে নাপাক পতিত বা মিশ্রিত হওয়ার দ্বারা পানি নাপাক হয়ে যায়। কিন্তু উক্ত পানির ছিটার কারণে সমস্ত শরীর নাপাক হবে না। [ফাতাওয়া মাহমূদিয়া: ৭/১৮,১৯,২৩]
(খ) নাপাকী থেকে গোসল করার পর শরীরে যে পানি লেগে থাকে তা না মুছে কাপড় পরিধান করলে তা নাপাক হবে না। আর ফরয গোসল করার সময় শরীর থেকে পানির ছিটা কাপড়ে পড়লে উক্ত কাপড়ও নাপাক হবে না। কারণ, এ ধরনের পানির ছিটা নাপাক নয়। তবে শর্ত হল গোসলের পূর্বেই শরীরের বাহ্যিক নাপাকী দূর করে নিতে হবে। [আহসানুল ফাতাওয়া, ২/৪১, ফাতাওয়া আলমগীরী:১/২৩, ১/১৫]
প্রশ্নঃ আমাদের এলাকার একজন মুরব্বি শ্রেণীর লোক বলেন যে, কেরোসিন নাকি নাপাক, শরীরে লাগলে নামায হবে না। কথাটি ঠিক? জানালে উপকৃত হব। = মাসুদ রানা, জয়দেবপুর, গাজীপুর।
উত্তরঃ কেরোসিন তৈল যেহেতু খনিজ দ্রব্য, তাই যতক্ষণ পর্যন্ত কোন নাপাক বস্তুর সঙ্গে তার সংমিশ্রণ না ঘটে, ততক্ষণ তার নাপাক হওয়ার কোন যুক্তি নেই। তবে কেরোসিন তৈল কাপড়ে লাগলে ধৌত করা ব্যতীত নামায পড়লে দুর্গন্ধের কারণে নামায মাকরূহ হবে।
এ দুর্গন্ধের কারণেই হারিকেন বা কেরোসিনের কোন আলো মসজিদে নেয়া মাকরূহ। এগুলো মসজিদের বাইরে রাখতে হয়। [ফাতাওয়া শামী:১/৩০৫, ইমদাদুল ফাতাওয়া:২/১৭১]
প্রশ্নঃ ঋতুস্রাব চলাকালীন কোন দু’আ অথবা সূরা বাংলায় অথবা ইংরেজীতে লিখে মুখস্ত করা যায় কি? = তাহমিনা আক্তার, পূর্বধলা।
উত্তরঃ ঋতুস্রাব চলাকালীন যে কোন দু’আ আরবী ভাষায় লিখে বা পড়ে মুখে উচ্চারণ না করে মনে মনে মুখস্থ করা যায়, ভিন্ন ভাষার প্রয়োজন নেই। তবে কোন সূরাকে মুখে উচ্চারণ করে তিলাওয়াত বা মুখস্ত করা যায় না। এমনিভাবে যে সকল সূরা বা আয়াতে দোয়ার বা ওযীফার দিক আছে সেগুলোকে দোয়া বা ওযীফার নিয়তে পাঠ করা যায়। উল্লেখ্য যে, কুরআন তিলাওয়াত শুধু আরবী ভাষাতেই হতে হবে। অন্য ভাষায় সহীহ উচ্চারণ, তিলাওয়াত সম্ভব নয়। [ফাতাওয়া শামী:১/২৯৩]
প্রশ্নঃ একজন মহিলার প্রতি মাসে প্রায় ৬দিন করে ঋতুস্রাব হয়। এক মাসে ৫দিনের মাথায় আছরের নামাযের পূর্বে বন্ধ হয়ে যায়। তবুও নামায না পড়ে ৬ দিনের অপেক্ষায় থেকে ফজরের সময় আর ঋতুস্রাব হল না দেখে গোসল করে নামায পড়েছে। কিন্তু যোহরের পূর্বে আবার রক্ত দেখা যায়। তখন ঐ মহিলা নামায পড়ার দরুন গোনাহগার হবে কি? = তাছলিমা বেগম, বরিশাল।
উত্তরঃ পূর্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যদি রক্ত বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে তার জন্য সতর্কতামূলক গোসল করে পাক পবিত্র হয়ে নামায পড়ে নেয়া উচিত। কিন্তু এমতাবস্থায় সহবাস থেকে বিরত থাকতে হবে, যেহেতু এখনো রক্ত আসার সম্ভাবনা আছে। সুতরাং মহিলাটি তার পূর্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে যে নামায পড়েছে, এজন্য গোনাহগার হবে না। বরং এটাই নিয়ম।
উল্লেখ্য, যদি পূর্বের মেয়াদ শেষ হয়ে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সাথে সাথে গোসল করে নামায আদায় করবে। তখন গোসল করার পর অথবা ঋতুস্রাব বন্ধ অবস্থায় এক ওয়াক্ত নামাযের সময় অতিবাহিত হওয়ার পর সহবাস করতে পারবে। [ফাতাওয়ায়ে অলমগীরী:১/৩৯, বেহেশতী জেওর:২/৬০]
প্রশ্নঃ ফজরের সুন্নাত নামায কি অবশ্যই ফরয নামাযের আগে পড়তে হয়? কোন অবস্থাতেই কি ফরযের পরে পড়া যায় না? = মা’সূম বিল্লাহ, চট্রগ্রাম।
উত্তরঃ ফজরের সুন্নাত ওয়াজিবের নিকটবর্তী এবং জামা’আতের সাথে নামায পড়াও ওয়াজিব। সুতরাং উভয়টাকে ঠিক রাখা সম্ভব হলে সেটাই করতে হবে। আর যদি উভয়টা ঠিক রাখা না যায়, তাহলে জামা’আতকে প্রধান্য দিতে হবে।
যদি সুন্নাত পড়ে ফজরের দ্বিতীয় রাক’আত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে মসজিদের বারান্দায় বা জামা’আতের কাতার ছেড়ে পিছনের কোন কাতারে গিয়ে দু’রাকাত সুন্নাত আদায় করে নিবে। তারপর জামা’আতে শরীক হবে। আর যদি সুন্নাত পড়তে গেলে ফরযের উভয় রাক’আত ছুটে যাওয়ার আশংকা থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে সুন্নাত ছেড়ে জামা’আতের সাথে ফরয পড়ে নিবে। সুন্নাত পড়ার প্রয়োজন নেই। তবে যদি কেউ ছুটে যাওয়া সুন্নাত পড়তে চায়, তাহলে সূর্য উদয়ের পরে পড়তে পারবে এবং তা এক্ষেত্রে নফল হবে। কিন্তু ফরযের পরে সূর্য উদয়ের পূর্বে কোন ধরনের সুন্নাত বা নফল নামায পড়তে পারবে না। [হিন্দিয়া:১/১২০, রহীমিয়া:৩/৪৭, দারুল উলূম:৪/২০৪]
প্রশ্নঃ নামায পড়ার পর মনে হল আমার উযু ছিলনা। এখন আমার কি করা উচিত? = শরীফ মাহমুদ, টাঙ্গাইল।
উত্তরঃ এমতাবস্থায় করণীয় হল- উযু করে পুণরায় উক্ত নামায আদায় করে নিতে হবে। কারণ, নামাযের জন্য পাক-পবিত্র হওয়া শর্ত। তাই তিনি পূর্বে যে নামাযটি আদায় করেছেন তা আদায় হয়নি। অতএব, সে নামাযটি উযু করে অর্থাৎ পাক-পবিত্রতা অর্জন করে পুনরায় আদায় করা জরুরী। অসতর্কতার দরুন আল্লাহর দরবারে ইস্তিগ্ফার করবে। [মিশকাত:৪০, আবু দাউদ:১/৮৭, শামী:১/৮৭, তিরমিযী:১/৩]
প্রশ্নঃ আমাদের এলাকায় ঝড়-তুফানের সময় প্রায় ঘরেই আযান ও তাকবীর দেয়া হয়। কিন্তু সম্পূর্ণ আযান কেউ দিতে চায় না? যেমন হাইয়া আলাচ্ছালাহ/ হাইয়া আলাল ফালাহ বলে না। এটা জায়িয?
= শফি আহমদ, নান্দাইল, কিশোরগঞ্জ।
উত্তরঃ প্রচণ্ড ঝড়- তুফানের সময় বা অবিরাম ঝড় বৃষ্টি চলতে থাকলে সুন্নাত ও মুস্তাহাব মনে না করে এমনিই আযান দেয়াটা মুবাহ (জায়িয)। যদি কোন স্থানে প্রচণ্ড ঝড়-তুফানের সময় আযান দিতে হয়, তাহলে পূর্ণ আযান দিতে হবে। [কিফায়াতুল মুফতী:৩/৬, ইমদাদুল ফাতাওয়া:১/১৬৫]
প্রশ্নঃ জনৈক লোক আমাকে বলে যে, দাঁড়ি কেটে বা ছেঁটে যদি এতটুকু রাখা হয়, যা ৪০ (চল্লিশ) হাত দূর থেকে দেখা যায়, তাহলে এমন ইমামের পিছনে নামায পড়া যাবে। এই সম্বন্ধে শরীয়তের হুকুম কি?
= আজহার আলী, বোররচর, ময়মনসিংহ।
উত্তরঃ তার কথা ঠিক নয়। এর কোন ভিত্তি নেই; বরং এক মুষ্টি হওয়ার পূর্বে দাঁড়ি কাট-ছাঁট করা হারাম। কেউ যদি এক মুষ্টির আগেই কাটে বা ছাঁটে, তাহলে তার পিছনে নামায পড়া যাবে না। শরীয়তের দৃষ্টিতে সে ফাসিক। সে ইমামতির অযোগ্য। তার ইমামতি করা বা আযান-ইকামত দেয়া নাজায়িয। তাকেই ইমাম বা মুআয্যিন পদে নিয়োগ বা বহাল রাখা কর্তৃপক্ষের জন্য নাজায়িয। [ফাতাওয়া শামী:১/৪১৪, ফাতাওয়া দারুল ঊলূম: ৩/২৪০, আযীযুল ফাতাওয়া:২০১]
প্রশ্নঃ নামাযের জামা’আত হচ্ছে, এমন সময় একজন লোক এসে পিছনের কাতারে একা দাঁড়াল। এখন সে একা কাতারে দাঁড়াবে, নাকি সামনের কাতার থেকে কোন একজনকে টেনে আনবে, যদি টেনে আনে, তবে নিয়ত বেঁধে, নাকি নিয়ত বাঁধার আগে টেনে আনবে? = হাবীবুর রহমান, ফুলপুর, ময়মনসিংহ।
উত্তরঃ নামাযের জামা’আত হচ্ছে, এমন সময় একজন লোক নামায পড়ার জন্য হাজির হলে সামনের কাতারে কোন খালি জায়গা না থাকলে, কাতারের মাঝখান থেকে একজনকে টেনে নিয়ে তার সাথে পিছনের কাতারে দাঁড়াবে। টেনে আনার ব্যাপারে নিয়ম হল- যিনি টেনে আনবেন, তিনি নিয়ত বেঁেধও টেনে আনতে পারেন, আবার নিয়ত বাঁধার পূর্বেও টেনে আনতে পারেন। উভয় সূরত জায়িয আছে। তবে এ ব্যাপারে লক্ষণীয় যে, এমন ব্যক্তিকে টেনে আনবেন- যিনি নামাযের এ মাসআলা সম্পর্কে জ্ঞাত। যেন তিনি আবার ঝগড়া করে নামায নষ্ট করে না ফেলেন। [আলমগীরী, ১/৮৮, ইমদাদুল ফাতাওয়া:১/৩৯০]
প্রশ্ন: এক ব্যক্তির নিকট এই পরিমাণ অর্থ ছিল যে, সে বাইতুল্লাহর হজ্জ করতে পারে। কিন্তু পরবর্তীতে কিছু জটিলতার কারণে অন্যত্র বসবাস অবলম্বন করেছে। যেহেুত সেখানে তার ঘর নির্মাণ করতে হয়েছে এজন্য অর্থ খরচ হয়ে গিয়েছে। এবার প্রশ্ন হলো এই ব্যক্তির উপর যখন পর্যাপ্ত অর্থ বিদ্যমান ছিল তখন তার যিম্মায় হজ্জ ফরজ হয়ে গিয়েছিল কি না?
উত্তর: যদি ঘর নির্মাণের জরুরত হজ্জ এর পূর্বেই এসে গিয়ে থাকে এবং বাধ্যবাধকতার কারণে ঘর নিমাণ করা হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে হজ্জ ফরজ হয়নি। আর যদি হজ্জের মৌসুম অর্থাৎ যে সময়ে লোকজন আশপাশ থেকে হজের জন্য যাচ্ছিল সে সময় ঘর নির্মাণের প্রয়োজন পড়েনি, কিন্তু পরবর্তীতে প্রয়োজন হয়েছে এবং সে প্রেক্ষাপটে অর্থ খরচ করে ফেলেছে তাহলে তার যিম্মায় হজ্জ ফরজ হয়ে গিয়েছিল। [ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ১১/২৯০]
প্রশ্নঃ কোন ব্যক্তি চার রাক’আত ওয়ালা ফরয নামাযের তিন রাকা’আত ইমাম সাহেবের সাথে আদায় করেছে। সে ভুলবশতঃ ইমাম সাহেবের সাথে ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে দিয়েছে। সাথে সাথে মনে হল যে, তার এক রাক’আত বাকী রয়েছে। তাই ইমাম সাহেব বাম দিকে সালাম ফিরানোর সময় সে উঠে বাকী রাক’আত আদায় করল। এতে নামাযের কোন ক্ষতি হবে কি? = মাহবুব আলম, জয়নাবাজার, গাজীপুর।
উত্তরঃ প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী তার নামায সহীহ হয়ে গেছে, তবে ইমামের একদম সাথে সাথে সালাম ফিরিয়ে থাকলে সাহু সিজদা লাগবে না। আর যদি ইমামের ‘আস্সালামু’ শব্দ শেষ হওয়ার পর সালাম ফিরিয়ে থাকে তাহলে সাহু সিজদাহ করে নিলে তার নামায সহীহ হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, তিনি ইমামের বাম দিকে সালামের সময় যে অবশিষ্ট নামায পূর্ণ করার জন্য উঠেছেন, এটা মুস্তাহাব নিয়ম নয়। বরং মুস্তাহাব নিয়ম হল- ইমামের উভয় দিকে সালাম ফিরানোর পর সামান্য দেরী করে তারপরে উঠা। [ফাতাওয়া শামী:২/৮২, আল-বাহরুর রায়িক:২/১০০, আহসানুল ফাতাওয়া:৪/২৪]
প্রশ্নঃ (ক) মহিলাদের দ্বারা যবেহকৃত জন্তু খাওয়া জায়িয আছে কি?
(খ) কোন পশু-পাখি যবেহ করার সময় যদি ছুরী বেশী ধারালো হওয়ার কারণে দেহ হতে মাথা পৃথক হয়ে যায়, তাহলে ঐ প্রাণী খাওয়া জায়িয আছে কি? =সুরাইয়া ইয়াসমিন, বরিশাল।
উত্তরঃ (ক) মেয়ে লোকের দ্বারা যবেহকৃত জন্তু খাওয়া জায়িয আছে। যবেহের ক্ষেত্রে পুরুষ হওয়া জরুরী নয়। কোন সাহায্যকারী না থাকলে পায়ের নীচে দাবিয়েও যবেহ করা যেতে পারে। [হিদায়া:৪/৪৫০, ফাতাওয়া আলমগীরী:৫/২৮৬]
(খ) কোন পশু-পাখি যবেহ করতে গিয়ে যদি ধারালো ছুরীর কারণে মাথা শরীর থেকে পৃথক হয়ে যায়, তাহলে তা খাওয়াতে কোন অসুবিধা নেই। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে অথবা বেপরোয়াভাবে এমনটি করা মাকরূহ। কেননা, এতে প্রয়োজনের বাইরে জানোয়ারটিকে কষ্ট দেয়া হচ্ছে। আর হাদীসে এমনটি নিষেধ করা হয়েছে। [হিদায়া:৪/৪৩৪, ফাতাওয়া আলমগীরী:৫/২৮৬, ফাতাওয়া খানিয়া:৩/৩৮৬, ইমদাদুল ফাতাওয়া:৩/৫৪৮]প্রশ্নঃ কেহ যদি নামায রোযা ইত্যাদি যথাযথভাবে পালন করে; কিন্তু আত্মশুদ্ধি করে না বা এর প্রয়োজন মনে করে না, তাহলে তার কোন ক্ষতি হবে কি? = আব্দুর রহীম, টাঙ্গাইল।
উত্তরঃ হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ. বলেন, নামায রোযা ইত্যাদি ইবাদত শরীআতে ফরযে আইন। তেমনিভাবে আত্মশুদ্ধিও ফরযে আইন। আর কেউ এক ফরয আদায় করে অপর ফরয ছেড়ে দিলে সে শাস্তিযোগ্য হবে। তাই শুধু নামায রোযা করল কিন্তু আত্মশুদ্ধি করল না, এতে তার ফরয তরক করার গুনাহ হবে, শুধু এতটুকুই নয় বরং অনেক ক্ষেত্রে ইসলাহে নফস না থাকার দরুন এবং ইখলাস হাসিল না হওয়ার দরুন সমস্ত ইবাদত-বন্দেগীই বাতিল হয়ে যেতে পারে। যেমন কেউ আল্লাহওয়ালার দরবারে গিয়ে অন্তরের রোগসমূহের চিকিৎসা করিয়ে আত্মার গুণগুলো অর্জন করল না, তাহলে রিয়ার কারণে তার সকল ইবাদত বরবাদ হয়ে যাওয়ারই প্রবল আশংকা আছে। কারণ অন্তরের গুণাবলীর মধ্যে একটা হল ইখলাস। এখন কেউ যদি রিয়ার সাথে ইবাদত করে অর্থাৎ তার ইবাদতে ইখলাস বা লিল্লাহিয়্যাত না থাকে তাহলে তার ইবাদত আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না, বরং বাহ্যিক দৃষ্টিতে উহা ইবাদত মনে হলেও মূলত তা ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে না। হাদীসে ইরশাদ হয়েছে যে, কিয়ামতের দিন সর্ব প্রথম তিন শ্রেণীর লোকদের দ্বারা আল্লাহ তা’আলা জাহান্নাম উদ্বোধন করবেন। যথা:
(ক) শহীদ (খ) আলেম (গ) দানবীর, যারা পূর্ণ যিন্দেগী জান-মাল দিয়ে ইবাদত-বন্দেগী ও দ্বীনের কাজ করে গেছে, তবে তাদের অভাব শুধু এতটুকুই ছিল যে, তারা অন্তরের রোগ-রিয়া দূর করেনি এবং অন্তরের গুণ ইখলাস হাসিল করেনি। অপর এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, জনৈক মহিলা বেশী বেশী নামায রোযা-সদকা ইত্যাদি আদায় করত কিন্তু প্রতিবেশীদেরকেও কষ্ট দিত, হুযূর সা. বলেন, সে জাহান্নামী। এখানেও ইবাদত থাকা সত্ত্বেও অন্তরে খোদাভীতির অভাব ছিল, যদ্দরুণ সে মানুষকে কষ্ট দিত এবং শেষ পর্যন্ত জাহান্নামী হল।
উপরোক্ত আলোচনা হতে প্রতীয়মান হল যে, শুধু নামায রোযা ইত্যাদি আদায় করলেই চলবে না বরং আত্মশুদ্ধি ব্যতীত অনেক ক্ষেত্রে ইবাদতও বিফলে যাবে এবং জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হবে। [মিশকাত:১/৩৩, ২/৪২৪]
প্রশ্নঃ বিধর্মীদের অনুকরণের নিয়ত না থাকলে স্বামীকে খুশী করার জন্য কপালে টিপ দেয়া জায়িয আছে কি? = শারমিন আক্তার, জামালপুর।
উত্তরঃ কপালে টিপ দেয়া যেহেতু হিন্দুয়ানী প্রথা, শুধু হিন্দুয়ানী প্রথা নয় বরং তাদের জাতীয় শি’আর, তাই বিধর্মীদের প্রথা পালন করাই নাজায়িয। আর তাদের জাতীয় শি’আরের অনুকরণ তো স্পষ্ট হারাম কাজ। সুতরাং তা পরিত্যাজ্য। বান্দাকে খুশী করার জন্য আল্লাহর এবং আল্লাহর রাসূলের হুকুম অমান্য করা কখনও জায়িয হতে পারে না। (তাফসীরে কুরতুবী:৯/২৬৬, আবু দাউদ:২/৫৫৯)
প্রশ্নঃ (ক) মেয়েদের ঋতুস্রাব অবস্থায় কুরআন শরীফের আয়াত দু’আর নিয়তে পড়া যাবে কি?
(খ) ঋতুস্রাব অবস্থায় চোখে সুরমা ব্যবহার বা যমযমের পানি পান করা যাবে কি?
(গ) ঋতুস্রাব অবস্থায় তা’লিমের কিতাব পড়া যাবে কি? =জান্নাতুল ফেরদৌস (তামান্না), কিশোরগঞ্জ।
উত্তরঃ (ক) হ্যাঁ, ঋতুস্রাব অবস্থায়ও কুরআন শরীফের ঐ সকল আয়াত দু’আর নিয়তে পড়া যায়, যেগুলোকে দু’আ হিসেবে পড়া হাদীসের দ্বারা প্রমাণিত আছে। [বেহেশতী যেওর:২/৬৩, শামী:১/২৯৩]
(খ) ঋতুস্রাব অবস্থায় চোখে সুরমা ব্যবহার বা যমযমের পানি পান করা যাবে।
(গ) ঋতুস্রাব অবস্থায় তা’লীমের কিতাব ও অন্যান্য ইসলামী বই পড়া যাবে। এতে কোন অসুবিধা নেই। তবে উক্ত বইয়ে যদি কুরআন শরীফের আয়াত থাকে, তাহলে উক্ত আয়াত স্পর্শ ও তিলাওয়াত করা যাবে না। শুধু অর্থ পড়ে নিবে। [হিদায়া:১/৬৪, আহসানুল ফাতাওয়া:২/৭১, বেহেশতী যেওর:২/৬৩]
প্রশ্নঃ টেলিভিশন দেখা শরীয়তের দৃষ্টিতে কেমন? টেলিভিশনের মালিক ও অন্যান্য দর্শকদের মধ্যে গুনাহর পার্থক্য কতটুকু? = সায়েম, ঢাকা।
উত্তরঃ টেলিভিশন রাখা, দেখা, দেখানো ও টেলিভিশনে কোন কিছু শুনা বা শুনানো নাজায়িয ও হারাম। কারণ, বর্তমানে টেলিভিশনে ব্যাপকভাবে বেহায়া, অশ্লীল ও অবৈধ প্রোগ্রাম হয়ে থাকে। যা সম্পূর্ণরূপে শরীয়ত পরিপন্থী। যেমন- প্রাণীর ফিল্ম, ছবি, বাজনা, খেলা-তামাশা, নাচ-গান, বেগানা-বেপর্দা মেয়েলোক ও ছতরহীন খেলোয়ারদের দর্শন করা প্রভৃতি।টেলিভিশনের মালিকের আমলনামায় টেলিভিশন দেখার ও সকল দর্শকের গুনাহর সমপরিমাণ গুনাহ লিখা হবে। আর দর্শকের আমলনামায় তার একার গুনাহ লেখা হবে। [বুখারী শরীফ:২/৮৮১, আদ্দুররুল মুখতার:৫/২৪৫, নিযামুল ফাতাওয়া:২/৯৯]
প্রশ্নঃ আমার এলাকার এক ভাই বললেন, কোন ব্যক্তি যদি আল্লাহওয়ালার সাথে ইসলাহী সম্পর্ক না রেখে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ করতে থাকে তথা চিল্লা বা ১সাল লাগায় তাহলে এর দ্বারা তার আত্মশুদ্ধি হাসিল হবে। কথাটা কি ঠিক? = মাহফুজুর রহমান, বাগেরহাট, খুলনা।
উত্তর: হযরত মাওলানা ইলিয়াছ রহ. প্রতিষ্ঠিত প্রচলিত দাওয়াত ও তাবলীগ মানুষকে আল্লাহ তা’আলার দিকে ধাবিত করে, মানুষের মধ্যে ঈমান, আমল, তায়াক্কুল ইত্যাদি গুণাবলী অর্জন হয়, মুজাহাদা করার যোগ্যতা হাসিল হয়, দ্বীনী কাজ করার জযবা জন্মে, আরো অনেক ফায়দা রয়েছে, তবে এর এই অর্থ নয় যে, তাবলীগী মেহনত করলে দ্বীনের অন্য কোন মেহনত করার প্রয়োজন হবে না, বরং দাওয়াতের মেহনত করার পর যাদের ক্বিরাত সহীহ নয় তারা ক্বারী সাহেবের নিকট গিয়ে সূরা-ক্বিরাত সহীহ করে নিবে, উলামা- মুফতীগণের নিকট গিয়ে মাসাইল জেনে নিবে, এবং আল্লাহওয়ালাদের নিকট গিয়ে আত্মশুদ্ধি করবে, তাহলে তার দ্বীনদারী পরিপূর্ণ হবে। তাবলীগের তৃতীয় সিফাত ইলম ও যিকির এবং তাসহীহে নিয়ত দ্বারা এটাই বুঝানো হয়েছে। আল্লাহ তা’আলা দ্বীনের হিফাযতের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা করেছেন। এর প্রত্যেকটার অবদান ও খিদমত ভিন্ন ভিন্ন। এর কোন একটার দ্বারা দ্বীনের সকল লাইনের খিদমত আন্জাম দেয়া সম্ভব না। সুতরাং মসজিদ-মাদরাসা- মক্তব, খানকাহ, দাওয়াত, জিহাদ, ইরশাদ এ সবই দ্বীনের এক লাইনের মেহনত, এর কোনটাকে বন্ধ করা বা বাদ দেয়া সম্ভব নয়।
প্রচলিত তাবলীগ জামা’আতের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মাওলানা ইলিয়াছ রাহ. নিজেও হযরত মুফতী রশীদ আহমদ গাংগুহীর খানকায় থেকে নিজ আত্মার পরিশুদ্ধি করিয়েছেন এবং হযরত মাওলানা ইলিয়াছ রহ.-এর বিশেষ যে কয়জন মুরুব্বী ছিলেন যথা হযরত গাংগুহী রহ. হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ. ও হযরত মাওলানা খলীল আহমদ সাহারানপুরী রহ.। এঁদের সকলেই শাইখের দরবারে নিজেকে মিটিয়ে আত্মশুদ্ধি করিয়েছেন, এর পর আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে দুনিয়াতে চমকিয়েছেন।
তাছাড়া শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা যাকারিয়া রহ. যার লিখিত কিতাবাদীর মাধ্যমে তাবলীগ জামাআতের এবং মুসলিম মিল্লাতের ব্যাপক ফায়দা হচ্ছে, তিনিও আল্লাহওয়ালাদের দরবারে গিয়ে আত্মার পরিশুদ্ধি করিয়েছেন। আমাদের বাংলাদেশের তাবলীগ জামাআতের যিনি সর্বপ্রথম আমীর ছিলেন মরহুম হযরত মাওলানা আব্দুল আযীয রহ. তিনিও হযরত যাকারিয়া রহ.-এর দরবারে নিজেকে সোপর্দ করে আত্মশুদ্ধি করিয়েছেন এবং তিনি শায়খুল হাদীস হযরত মাওলানা যাকারিয়া রহ. এর বিশিষ্ট খলীফাও ছিলেন। শুধু দাওয়াত ও তাবলীগের মাধ্যমেই যদি আত্মশুদ্ধি অর্জিত হয়ে যেত তাহলে তাবলীগের উপরোল্লেখিত বড় বড় মুরব্বীগণের নিজেদের আত্মার পরিশুদ্ধির জন্য আল্লাহওয়ালাদের দরবারে যাওয়ার কোন প্রয়োজন হত না।
তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ করার জন্যে যখন বিভিন্ন দেশ ঘোরা হয় বা কারোর দাওয়াতে প্রচুর লোক আল্লাহর রাস্তায় বের হয়ে পড়ে তখন নিজের মধ্যে আত্মগর্ব বা অহংকারও চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে, যা নিজের আমল বরবাদ হওয়ার কারণ হয়ে দাড়াতে পারে।
সুতরাং দাওয়াতের পাশাপাশি নিজের আমলের হিফাযতের লক্ষ্যে অন্তরের রোগসমূহেরও সংশোধন করাতে হবে, যা আল্লাহওয়ালাদের শিখানো পদ্ধতি ছাড়া কোন অবস্থায় সম্ভব নয়। দীর্ঘ ১৪০০ বছর এভাবেই আত্মশুদ্ধির কাজ চলে আসছে। (সূরা আলে ইমরান:১৬৪, মিশকাত শরীফ:২/৪৩৩)

পরামর্শ

জিজ্ঞাসা : আপু, পিতা-মাতার সাথে সন্তান সব সময়েই বে’আদবী করে। যেমন, তাদেরকে গালাগালি করে, অন্ন-বস্ত্রের ব্যবস্থা করে না ইত্যাদি। উক্ত সন্তানকে কিভাবে পিতা-মাতার বাধ্য করা যায়, তার একটা সুন্দর পরামর্শ দিয়ে বাধিত করবেন।
মুহাঃ শাকুর আলী শেখ, সোনাতলা, বগুড়া।
পরামর্শ: সন্তান যদি ছোট থাকে তাহলে তাকে ভালো দ্বীনদার কোন আলেম দ্বারা দ্বীন শিক্ষা দিন। আর যদি বড় হয়ে যায় তাহলে তাকে কোন জ্ঞানী বা আলেমের মাধ্যমে বুঝিয়ে-শুনিয়ে তাবলীগে পাঠিয়ে দিন। দেখবেন দ্বীনের বুঝ যখন এসে যাবে সব ঠিক হয়ে যাবে।

জিজ্ঞাসা: আপু! সন্তানকে দ্বীনদারী বানাবো কিভাবে? = ফেরদাউস, জয়দেবপুর।
পরামর্শ: সন্তানকে ছোট থাকতেই দ্বীন শিখাবে এবং গ্রামের মসজিদ ভিত্তিক মক্তবে পাঠাবে অথবা কোন হুজুর রেখে অর্থসহ কুরআন ও বিভিন্ন হাদিস শিক্ষা দিবে। কিছু বড় হলে মাদরাসায় বা কোন দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার জন্য পাঠাবে।

জিজ্ঞাসা: আপু, অনকেই চুরি করে, ঘুষ খায়, সুদ খায় আবার নামাযও পড়ে, তার ব্যাপারে আমাদের করুণীয় কি? =আব্দুল লতিফ, ঠাকুরগাঁও।
পরামর্শ: আল্লাহর আদেশ মানা পুণ্যের কাজ আর না মানা গোনাহের কাজ। অতএব যে ব্যক্তি চুরি করে, ঘুষ খায়, সুদ খায় আবার নামাযও পড়ে তার চুরি, ঘুষ, সুদ খাওয়ার জন্য সে গোনাহগার হবে। কিন্তু সে যে নামায পড়তেছে সে জন্য তাকে কিছু বলবেনা। কারণ, কুরআন শরীফে আছে- ‘নিশ্চয় নামায মানুষকে অন্যায় ও গর্হিত কাজ হতে বিরত রাখে।’ তাকে ঐ অন্যায় কাজ থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য বুঝাতে হবে এবং দোয়া করবে।
জিজ্ঞাসা: আপু, আমাদের পারিবারিক পরিবেশটা অনৈসলামিক, আমার বাবা-মা, ভাই-বোন প্রায় সবাই নামায রোজা পালন করে না, টিভি, ডিস লাইনসহ অশ্লীল সবই তাদের করতে দেখি। কেউ এটাকে অন্যায়ই মনে করেনা। কিন্তু আমার এগুলো ভালো লাগেনা। এখন আমি কি করব? =ফাহিমা আক্তার (লিপি), মহাখালী, ঢাকা।
পরামর্শ: তুমি নিজে ইসলামী আইন-কানুন মেনে চল, নামায, রোজা এবং পর্দামত চল। আর বাংলা অর্থসহ কুরআন ও হাদিসের কিতাব ক্রয় করে তা থেকে বিভিন্ন আয়াত ও হাদিস পড়ে তাদেরকে বুঝাতে থাক। আর খেয়াল রাখবে আশপাশে কোথায় মাস্তুরাতের জামাত আসলে সেখানে তোমার মা এবং বোনদেরকে নিয় শরীক হওয়ার চেষ্টা করবে। দেখবে একদিন তুমি সফল হবে ইনশাআল্লাহ। আমিও দোয়া করি আল্লাহ তোমাকে সফলতার মুখ দেখান।
জিজ্ঞাসা: আপু, আমার জীবনে ছোটে যাওয়া নামাজগুলো কিভাবে আদায় করব? = রফিকুল ইসলাম, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম।
পরামর্শ: তুমি তোমার জীবনের ছোটে যাওয়া নামাযগুলির জন্য আল্লাহর কাছে বেশি বেশি করে তাওবা কর এবং বেশি বেশি করে নফল নামায পড়। আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই তোমার পূর্বের নামায মাফ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ এবং তার ঘাটতি নফল দ্বারা পূর্ণ করে দিবেন। নিশ্চয় আল্লাহ অতি দয়ালু মেহেরবান।

Related posts

Leave a Comment