আলোর পথে ::::: এপ্রিল – ’১২

ইসলাম গ্রহণ নিয়ে সাক্ষাতকার

হিন্দু থেকে মুসলমান হলেন

অরণকুমার চক্রবর্তী

মূল : মাওলানা আহমদ আওয়াহ নদভী

অনুবাদ : মুফতী যুবাইর আহমদ

 

…………………………………………………………………………………………

** ভারতের অমুসলিম হিন্দুদেরকে ইসলামে দীক্ষিত করতে পীরে কামেল মাওলানা কালিম সিদ্দিকী (দা. বা.) নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর মাধ্যমে বহু হিন্দু হিদায়াত লাভ করে ইসলামধর্ম গ্রহণ করেছেন।

ভারতের ফুলাত-এর তাঁর ইসলামী কেন্দ্র হতে প্রকাশিত উর্দু পত্রিকা ‘আরমুগান’-এ সেসকল নওমুসলিমগণের ইসলামগ্রহণ সম্পর্কে সাক্ষাতকার প্রকাশ করা হয়। তাঁর সুযোগ্য সাহেবজাদা মাওলানা আহমদ আওয়াহ নদভীর গ্রহণকৃত উক্ত সাক্ষাতকারসমূহ বাংলায় অনুবাদ করে মাসিক আদর্শ নারীর পাঠক-পাঠিকাগণের নিকট ধারাবাহিকভাবে পেশ করা হচ্ছে।

এ সংখ্যায় নওমুসলিম জনাব আনাস (পূর্ব নাম – অরণকুমার চক্রবর্তী)-এর ইসলামগ্রহণ সম্পর্কিত সাক্ষাতকার প্রকাশ করা হলো। **

…………………………………………………………………………………………

 

আহমদ আওয়াহ : আস-সালামু ‘আলাইকুম ওয়া-রাহমাতুল্লাহি ওয়া-বারাকাতুহ্।

নওমুসলিম আনাস : ওয়া-‘আলাইকুমুস সালামু ওয়া-রাহমাতুল্লাহি ওয়া-বারাকাতুহ্।

আহমদ আওয়াহ : আনাস ভাই! বহুদিন পর আপনার  সাথে সাক্ষাত  হলো।

নওমুসলিম আনাস : আসলেই বহুদিন পর আসতে পেরেছি। ফুলাতে দুই-তিন বার গিয়েছি, কিন্তু হযরত (মাওলানা কালিম সিদ্দিকী সাহেব) সফরে থাকার কারণে সেখানে সাক্ষাত হয়নি। এবার দিল্লীর ঠিকানা সংগ্রহ করে ফোনে যোগাযোগ করে এলাম।

আহমদ আওয়াহ : আলহামদুলিল্লাহ, আপনি সময়মতোই এসেছেন। ফুলাত থেকে ‘আরমুগান’ নামে একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। সেখানে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয়গ্রহণকারী সৌভাগ্যবান ভাই-বোনদের সাক্ষাতকার ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়, যাতে দাঈ ভাই-বোনদের দাওয়াতী কাজের পাথেয় হয়। আমি নাদওয়াতুল উলামা লক্ষেèৗ থেকে বাসায় ফিরে ভাবছিলাম, এই মাসে কার সাক্ষাতকার গ্রহণ করা যায়। মহান আল্লাহর শোকর যে, তিনি আপনাকে পাঠিয়েছেন। তাই আমি এখন আরমুগানের জন্য আপনার সাক্ষাতকার গ্রহণ করতে চাই।

নওমুসলিম আনাস : আহমদ ভাই! আমি এর উপযুক্ত কোথায়? তবে আপনি যদি কিছু জানতে চান, আমি তা জানাতে পারি। এর দ্বারা দাঈ ভাই-বোনদের কোনো উপকার হলে, তা আমার জন্য সৌভাগ্য হবে।

আহমদ আওয়াহ : প্রথমে আপনার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিন!

নওমুসলিম আনাস : আলহামদুলিল্লাহ, আমার বর্তমান নাম আনাস। ২৪ মে – ২০০০ ইং আল্লাহ তা‘আলা আমাকে ফুলাতে এনে আপনার পিতা মাওলানা কালিম সিদ্দিকী সাহেবের হাতে কালেমা পড়ে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করার সৌভাগ্য দান করেছেন।

আমার জন্মস্থান কলকাতা। আমার পূর্বের নাম অরণকুমার  চক্রবর্তী। আমরা বংশগতভাবে চক্রবর্তী ব্রাহ্মণ। আমার পিতার নাম শ্রী অরুণকুমার। তিনি বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। কলকাতার বড় একটি বাজারে চামড়ার জ্যাকেট ইত্যাদির ব্যবসা ছিল আমাদের।

আমরা দু’ভাই ও দু’বোন। আমি ভাই-বোনদের মধ্যে সবার বড়। আমি ইংরেজীতে এমএ পাশ করেছি।

আহমদ আওয়াহ : আপনার ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে কিছু বলুন।

নওমুসলিম আনাস : ১৯৯৭ ইং সনে আমার পিতা পেটের ব্যথায় ভুগছিলেন। ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর রিপোর্ট দিলেন যে, তার ক্যান্সার হয়েছে। অপারেশন করা হলো। অল্প কিছুদিন সুস্থতা বোধ করেছিলেন। কিন্তু কিছুদিন পর পুনরায় ব্যথা বাড়তে লাগল। দেড় বছর কঠিন ব্যথায় ভোগার পর ১৬ মার্চ ১৯৯৯ ইং তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

আমি বড় সন্তান হওয়ায় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হিসাবে আমাকেই আমার বাবার মুখাগ্নি করতে হয়েছিল। বাবাকে আগুনে পোড়ানোর সেই করুণ দৃশ্য আমার জন্য খুবই কষ্টদায়ক ছিল। সেই সাথে এই ক্রিয়াকর্মে পুরোহিতদের আচার-আচরণ এবং আমার এই কঠিন মুহূর্তে তাদের বিভিন্ন চাওয়া-পাওয়া আমাকে হিন্দুধর্মের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করে দেয়। তবে এই ঘৃণা এমন পর্যায়ের ছিল না – যার ফলে বড় ধরনের কোনো পদক্ষেপ নিতে হবে।

এরপর পাঁচমাস ধরে আমার বড় বোন মস্তিষ্কজনিত জ্বরে ভোগে এবং একমাস অত্যন্ত অসুস্থ থেকে মৃত্যুবরণ করে। সে আমাকে খুবই ভালোবাসতো। আমারও তাঁর প্রতি ছিল গভীর স্নেহ ও ভালোবাসা। মৃত্যুর সময় সে সাতমাসের গর্ভবতী ছিলো।

তাঁকে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হলো। পুরোহিতরা লাশ দেখে বলতে লাগল, এই মহিলাটি গর্ভবতী, তাকে এভাবে  পোড়ানো যাবে না।  বরং এর পূর্বে তার পেট কেটে এই বাচ্চাটাকে বের করতে হবে এবং বাচ্চাটিকে পোড়ানো যাবে না, তাকে দাফন করতে হবে। আমি পণ্ডিতজীকে বললাম যে, এই মৃত বোনের পেট কী করে ফাঁড়া হবে? এটা আমাদের দ্বারা সম্ভব নয়। তিনি বললেন, তাহলে তাকে আমাদের শ্মশানে পোড়ানো যাবে না। আমি বললাম, আমরা নিজেরাই লাশ দাহ করব। তিনি বললেন, শ্মশানের বাইরে অন্য কোথাও গিয়ে করুন। আমি বোনকে অন্য কোথাও নিয়ে যেতে আত্মীয়-স্বজনকে তাগিদ করলাম, কিন্তু তারা তা করতে রাজী হলেন না। তারা যুক্তি খাড়া করলেন যে, এরা ধর্মের পণ্ডিত, তাদের কথা মানতে হয়। এতগুলো মানুষের মতামতের তোড়ে আমার বক্তব্য অগ্রাহ্য হলো। আমার সামনে আমার বোনকে উলঙ্গ করে পেট কেটে বাচ্চা বের করা হলো।

এতে আমার মন ভেঙে গেল। আমি হিন্দুধর্মের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেললাম।

এ ঘটনার কিছুদিন পর একজন ডাক্তার সাহেবের নার্সিং হাসপাতালে চাকুরী নিলাম। ডাক্তার সাহেব মুসলমান ছিলেন। কিছুদিনের মধ্যে তাঁর সাথে সংকোচ ভাব কেটে যাওয়ার পর আমার পুরো ঘটনা ডাক্তার সাহেবকে বললাম। তিনি খুবই ব্যথিত হলেন এবং আমাকে ইসলামের সুমহান পর্দা ও আদর্শিক বিধানের কথা জানালেন। আমি তখন ইসলামধর্ম গ্রহণ করার আগ্রহ ব্যক্ত করলাম। ডাক্তার সাহেব আমাকে দিল্লী জামে মসজিদে গিয়ে ইসলামধর্ম গ্রহণ করার পরামর্শ দিলেন।

আমি দিল্লী জামে মসজিদে গিয়ে শাহী ইমাম মাওলানা আবদুল্লাহ আল-বুখারী সাহেবের সাথে সাক্ষাত করলাম। তিনি আমার কাছে কিছু নির্ভরযোগ্য ব্যক্তির সত্যায়ন চাইলেন, যা আমার কাছে ছিল না। তাই আমাকে ফিরে আসতে হলো।

এরপর আমি একটি ইসলামী সংগঠনের অফিসে গেলাম। সেখানকার মাওলানা সাহেবরা আমাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করলেন। অস্থিরতা ও মানসিক অবস্থা বিক্ষিপ্ত থাকার কারণে সম্ভবত আমি তাদেরকে সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারিনি। তাই তারা আমাকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখতে লাগলেন এবং কালেমা পড়াতে ইতস্তত করতে লাগলেন। দু’দিন আমি সেখানে ছিলাম। এদিকে তারা আমাকে চোর ও অপরাধীদের মতো যাচাই-বাছাই করছিলেন বিধায় আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল। তাই আমি সেখান থেকে চলে আসি।

এরপর আমি ইসলাম গ্রহণ করার জন্য অনেক আলেম-উলামা ও ইমাম সাহেবের নিকটে গিয়েছি। কিন্তু কেন জানি প্রত্যেকেই কালেমা পড়াতে ভয় পাচ্ছিলেন। শেষে আমি নিরাশ হয়ে পাটনায় ফিরে যেতে মনস্থ করলাম।

পাটনায় ফিরে যাওয়ার নিয়ত করে নয়াদিল্লী রেলস্টেশনে পৌঁছলাম এবং প্লাটফর্মে গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। এমন সময় হরিয়ানার জৌলপুর গ্রামের এক মাওলানা সাহেবের সাথে সাক্ষাত হলো এবং কথায় কথায় তাঁর সঙ্গে পরিচয় হলো। আমি তাঁকে অভিজ্ঞ আলেম মনে করে আরো একবার তাঁর নিকট আমার ইসলাম গ্রহণ করার আগ্রহ ব্যক্ত করলাম এবং পূর্বে বর্ণিত ইসলাম গ্রহণের ব্যর্থ চেষ্টার কথা খুলে বললাম। তিনি আশ্চর্য হয়ে আমাকে বললেন, আপনাকে কি কেউ ফুলাতের কথা বলেননি কিংবা ঠিকানা বলে দেননি? আমি জিজ্ঞেস করলাম, ফুলাতে কী আছে? তিনি বললেন, সেখানে মাওলানা কালিম সাহেবের নিকট বহু মানুষ ইসলামধর্ম গ্রহণ করছেন। আপনি ফুলাতে চলে যান, সহজেই ইসলাম গ্রহণ করতে পারবেন, আপনার কোনো চিন্তা করতে হবে না।

আমি ফুলাতে যেতে রাজী হলে তিনি নিজেই আমাকে ফুলাতে মাওলানা কালিম সিদ্দিকী সাহেবের কাছে নিয়ে যেতে চাইলেন এবং বললেন, আমি ফুলাতে গিয়ে আপনাকে মাওলানা সাহেবের সাথে সাক্ষাত করিয়ে দিয়ে আবার জৌলপুর ফিরে আসবো। তার এ কথায় আমি খুবই খুশী হলাম।

তখন তিনি আমার টিকেটটি নিয়ে নিজেই ফেরত দিলেন এবং তাঁর নিজের টাকা দিয়ে আমার জন্য এবং তাঁর জন্য খাতুলিগামী ট্রেনের টিকেট ক্রয় করে আনলেন। আমরা খাতুলি নেমে অন্য একটি গাড়ীতে করে ফুলাত পৌঁছলাম।

সে সময় মাওলানা কালিম সিদ্দিকী সাহেব বাইরে বৈঠকখানায় বসা ছিলেন। আমাকে জৌলপুরের মাওলানা সাহেব মাওলানা কালিম সিদ্দিকী সাহেবের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন।

কালিম সিদ্দিকী সাহেব আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি বুঝে-শুনে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? আমি বললাম, জি হ্যাঁ, চিন্তা-ভাবনা করেই। আর এ জন্যই এতোদিন যাবত এ উদ্দেশ্যে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়িয়েছি। এ কথা শুনে মাওলানা সাহেব দাঁড়িয়ে গেলেন এবং আমার সাথে মু‘আনাকা করলেন আর বলতে লাগলেন, আপনি যদি দাঁড়িয়ে কালেমা পড়তে চান পড়ুন, অন্যথায় বসে নিন। আমি বসে গেলাম। তৎক্ষণাৎ মাওলানা সাহেব আমাকে কালেমা পড়িয়ে অর্থ বুঝিয়ে দিলেন এবং ইসলামের জরুরী নিয়ম-কানূন বলে দিলেন। অতঃপর আমার নাম জানতে চাইলেন। নাম জেনে আমার ইসলামী নাম ‘আনাস’ রাখলেন।

আলহামদুলিল্লাহ, এভাবে আমি ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেছি।

আহমদ আওয়াহ : ইসলাম কবুল করে আপনার কেমন অনুভূতি হয়েছিলো?

নওমুসলিম আনাস : আপনার আব্বুর মুহাব্বতের সাথে মু‘আনাকা এবং কোনো ঝামেলা ছাড়াই প্রথম সাক্ষাতেই কালেমা পড়ানোতে আমার সমস্ত কান্তি দুর হয়ে গেলো এবং মানুষের দ্বারে দ্বারে যাওয়ার কষ্ট ও চিন্তা একেবারে ভুলে গেলাম। আমার মনে হচ্ছিল, যেন আমাকে মুসলমান হবার জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছিল। বরং যখনই আমি ইসলামকে বুঝতে ও মানতে গেলাম, তখন আমার মনে হচ্ছিল যে, আমি স্বভাবজাতভাবেই মুসলমান হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছি। কিছুদিন পথ ভুলে একটি ভ্রান্তপথে চলে গিয়েছিলাম বৈকি।

সেদিন মাওলানা সাহেবের নিকট অনেক মানুষ বসা ছিলেন। পরে মাওলানা সাহেব তাদের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। আমি জানতে পারলাম, সকাল থেকে মাওলানা সাহেবের কাছে ৯জন ব্যক্তি মুসলমান হয়েছেন। এতে আমি যেমন আনন্দিত হলাম, এর চেয়ে আরও বেশী আশ্চার্যান্বিত  হচ্ছিলাম যে, আমাদের এই ৯জনের মধ্য হতে কাউকে কোনো মুসলমান দাওয়াত দেননি; কেউ ইসলামের সৌন্দর্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে, আবার কেউ ইসলামের ওপর লেখাপড়া করে সত্য জেনে দ্বীন-ইসলাম কবুল করেছেন। তবে অধিকাংশই তাদের ধর্মের অনৈতিক রীতি-নীতির ওপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে ইসলামের প্রতি মনোনিবেশ করে এবং ইসলামের আদর্শে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। মাওলানা সাহেব বললেন, এই ৯জন ছাড়াও ফিরোজপুরের এক মহিলাকে মোবাইলে কালেমা পড়িয়ে ইসলামে দীক্ষিত করেছেন। মাওলানা সাহেব তার নাম রেখেছেন আয়েশা।

আশ্চর্যের বিষয় যে, পরদিন মাওলানা সাহেবের সাথে কিছু মেহমান সাক্ষাত করতে এসেছিলেন। মাওলানা সাহেব তাদের কাছে গতকাল যেই মেয়েকে ফোনে কালেমা পড়িয়েছেন তার ঘটনা বলছিলেন। মাওলানা সাহেব বললেন, সেই মেয়েটি ফুলাতে এসে মুসলমান হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমার মনে হল যে, হায়াত-মওতের ব্যাপারে কিছু বলা যায় না, তাই ফোনেই কালেমা পড়ার জন্য তাকিদ করছিলাম। আর তিনি ফুলাতে এসে কালেমা পড়ার জন্য আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু আমি তাকে অনেক বেশী অনুরোধ করার ফলে তিনি মেনে নেন। আজ মালির কোটলা থেকে এক বোনের ফোন এসেছে যে, গতকাল যেই মেয়েকে কালেমা পড়ানো হয়েছে, তিনি গতকাল রাত্রে মৃত্যুবরণ করেছেন। এই ঘটনা মাওলানা সাহেবকে খুবই প্রভাবিত করল। আমি নিজেও অনেক প্রভাবিত হলাম।

আমি যেন বিদ্যুৎতাড়িতের ন্যায় চমকে উঠলাম। আমি ভাবতে লাগলাম যে, আমি ইসলাম গ্রহণের জন্য কত দুয়ারে ঘুরেছি, কিন্তু সবাই শুধু সময়ক্ষেপণ করছিলেন। যদি ইসলাম গ্রহণের পূর্বেই আমি মৃত্যুবরণ করতাম,  তাহলে পরকালে আমার কী অবস্থা  হতো! আর ওই লোকদের ওপর ক্ষুব্ধ হচ্ছিলাম যে, এক মিনিটের কালেমা পড়ানোর জন্য তারা এত ভয় পান!

আমি মাওলানা সাহেবের কাছে এই ক্রোধ প্রকাশ করলাম যে, যদি এই সময় আমার মৃত্যু হয়ে যেত, তাহলে আমার কী অবস্থা হত? মাওলানা সাহেব আমাকে সান্ত¡না দিয়ে বললেন, আপনিতো পাক্কা নিয়ত করে বেরিয়ে ছিলেন। আর আপনি যখন ইসলামকে সত্য বলে বিশ্বাস করে এবং মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে সত্য জেনে ইসলাম কবূল করার ইচ্ছা করেছিলেন আর লোকজনের নিকট এ কথা প্রকাশ করেছিলেন, তখন থেকেই আপনি পরোক্ষভাবে মুসলমান হয়ে গিয়েছিলেন। এ অবস্থায় আপনার যদি মৃত্যু আসতো, আশা করা যায়, ঈমানের ওপর মৃত্যু হতো। তিনি আমাকে আরো সান্ত¡না দিলেন যে, এখন যুগটা তেমন ভালো নয়। মানুষ চক্রান্ত করে এবং ধোঁকা দেয়। তাই আলেমগণ সতর্কতা অবলম্বন করেন।  যদি আপনি তাদের স্থানে হতেন, তাহলে আপনি তাদের থেকে বেশী সতর্কতা অবলম্বন করতেন।

আমি মাওলানা সাহেবকে বললাম, তাহলে আপনি আমাকে সাক্ষাতের সঙ্গে সঙ্গে কালেমা পড়িয়ে দিলেন কেন? তিনি উত্তর দিলেন, ‘আমি তো একজন গ্রামের সাধারণ মানুষ, আর গ্রামের মানুষরা এতো চিন্তা-ভাবনা করেন না। আমরা তো মনে করি, পরে যা হওয়ার তা পরে দেখা যাবে। আজ তো আমরা আন্তরিকভাবে খুশী যে, আমাদের এক ভাই আমাদের সামনে  কুফর-র্শিক ও তার পরিণামে দোযখ থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে ইসলাম ও জান্নাতের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। আল্লাহ ভরসা, কাল যা চক্রান্ত হবার তা কাল দেখা যাবে।’

আহমদ আওয়াহ : ইসলাম গ্রহণের পর আপনার তরবিয়্যতের কী ব্যবস্থা হয়েছে?

নওমুসলিম আনাস :  আমার ইসলাম গ্রহণের পর জৌলপুরের মাওলানা সাহেব আমাকে রেখে রাত্রে চলে গেলেন। তার চলে যাওয়ার পর মাওলানা কালিম সাহেব আমাকে একটি কামরা দেখিয়ে বললেন, এটা আপনার কামরা, এখানে নিরাপদে থাকুন। সামনের ব্যাপারে আগামীকাল পরামর্শ করে নেব ইনশাআল্লাহ।

পরদিন মাওলানা সাহেব আমাকে তাবলীগ জামা‘আতে সময় লাগানোর পরামর্শ দিলেন। আমি বললাম, আপনি যা করতে বলবেন, তা-ই করতে প্রস্তুত আছি।

তৃতীয় দিন মাওলানা সাহেব আমাকে সাথে করে দিল্লী নিয়ে গেলেন। আমার সাথে আরো দু’জন নওমুসলিম সাথী ছিলেন। মাওলানা সাহেবের ভগ্নিপতি আমাদের তিনজনকে নিজামুদ্দীন মারকাযে নিয়ে গেলেন এবং একটি জামা‘আতের সাথে জুড়ে দিলেন।

পরদিন সকাল ১০টায় ফিরোজাবাদের উদ্দেশ্যে আমাদের রওনা হওয়ার কথা ছিল। সকালে আমীর সাহেব সকল সাথীকে একত্রিত করলেন। আমাদের সাথে সাহারানপুরের এক সাথী ছিলেন। তিনি জামা‘আতের এক সাথীকে বলে দিলেন যে, আমরা তিনজন নওমুসলিম। সেই সাথী আমীর সাহেবকে তা বলে দিলেন। তখন আমীর সাহেব আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনারা সরকারীভাবে ইসলাম গ্রহণের কাগজপত্র প্রস্তুত করেছেন? আমরা বললাম, জামা‘আত থেকে ফিরে এসে কাগজপত্র প্রস্তুত করবো ইনশাআল্লাহ। তিনি কাগজপত্র ছাড়া আমাদেরকে জামা‘আতে যেতে নিষেধ করে দিয়ে বললেন, আপনারা ফিরে যান।

আমরা তিনজনই এতে মনে খুব কষ্ট পেলাম। আমরা পরামর্শ করলাম, এখন কী করা যায়? আমাদের মধ্যে একজন বেলাল ভাই যিনি আগ্রার পার্শ্ববর্তী গ্রাম ফতেহপুরের অধিবাসী ছিলেন খুবই রাগী মানুষ ছিলেন। তিনি বলতে লাগলেন, নিজ নিজ বাড়ী চল। এভাবে আর কতদিন হয়রানীর শিকার হতে থাকবো? আমি বললাম, না, শয়তান আমাদেরকে ইসলামের সহীহ পথ থেকে বঞ্চিত করতে চাচ্ছে। সুরাহার জন্য এখন আমাদের ফুলাতে যাওয়া উচিত। আমার কথায় অন্যরা সায় দিলেন। তাই আমরা সেখান থেকে ফুলাত চলে এলাম।

আমরা ফুলাতে এসে মাওলানা কালিম সাহেবকে পেলাম না। তিনি সফরে গিয়েছেন। তাই আমরা তাঁর অপেক্ষায় সেখানে অবস্থান করতে থাকলাম।

মাওলানা সাহেব তিনদিন পর সফর থেকে ফিরলেন। আমাদেরকে দেখে আশ্চর্য হয়ে জামা‘আত থেকে ফিরে আসার কারণ জিজ্ঞেস করলেন। আমি পুরো ঘটনা শুনালাম এবং আমার খুব কান্না পেল। মাওলানা সাহেব আমাকে তাঁর বুকে জড়িয়ে নিলেন এবং আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনারা কেন বললেন যে, আপনারা নওমুসলিম? আপনারা নওমুসলিম কোথায়? আমাদের প্রিয়নবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “প্রত্যেক নবজাতক ইসলামী ফিতরাতের ওপর জন্মগ্রহণ করে; কিন্তু তার পিতা-মাতা তাকে ইয়াহুদী, খৃস্টান অথবা অগ্নিপূজারী বানিয়ে দেয়।” এই হাদীস অনুসারে আপনারা জন্মগতভাবে মুসলমান। মাঝে কিছুদিনের জন্য আপনারা বিধর্মী হয়ে গিয়েছিলেন। তাই আপনারা জামা‘আতে গিয়ে নিজেদেরকে নওমুসলিম বলে পরিচয় দিয়েই ভুল করেছেন।

সেই সাথে মাওলানা সাহেব তাবলীগের মুরব্বীগণের অপারগতার কথা তুলে ধরলেন এবং কিছু ঘটনাও শুনালেন যে, কিছুলোক দুরভিসন্ধিমূলকভাবে ইসলাম গ্রহণ করে থাকে। এরপর তারা মুসলমানদেরকে নানাভাবে হয়রানি করতে থাকে। এ নিয়ে কোট-কাচারী ও অনেক কিছু হয়। তাই তাঁরা এ ব্যাপারে খুব সতর্কতা অবলম্বন করেন।

মাওলানা সাহেবের কথায় আমরা সকলেই সন্তুষ্ট হলাম। অন্যের পক্ষ হয়ে এমনভাবে ভুল ধারণা দূর করায় এবং তাবলীগের আমীর সাহেবকে নির্দোষ সাব্যস্ত করায় তাঁর আন্তরিকতা আমার হৃদয় জয় করে নেয়।

রাত্রে আমি মাওলানা সাহেবকে বললাম, আমি আপনার সাথে ২/৪দিন থেকে এটাই বুঝতে পারলাম যে, যদি আপনার কাছে শয়তানের ব্যাপারেও অভিযোগ করা হয়, তাহলে আপনি তাকেও নির্দোষ প্রমাণিত করার চেষ্টা করবেন। মাওলানা সাহেব বললেন – যদি আমি এমন পরিবারের মধ্যে জন্মলাভ না করতাম এবং এমন শিক্ষা-দীক্ষা অর্জন না করতাম আর তাতে আমার চিন্তা-ভাবনা এমন না হত, তাহলে আমারতো মনে হয় যে, আমি তাদের থেকে বেশী খারাপ হতাম। এ কথা আপনার সান্ত¦নার জন্য বলছি না, বরং দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে বলছি।

আহমদ আওয়াহ : এরপর কী ফয়সালা হয়? আপনারা কি জামা‘আতে যাননি?

নওমুসলিম আনাস : হ্যাঁ, আমরা জামা‘আতে গিয়েছিলাম, তবে কাগজপত্র ঠিক করে যথাযথভাবেই। তা এভাবে সম্পন্ন হয় যে, পরদিন আমরা আবদুর রশীদ দুস্তাম ভাই-এর সাথে মিরাট কাচারিতে যাই। তিনজনকে একসাথে দেখে কেরানী সিরাজ সাহেব পেরেশান হয়ে বললেন, হযরতকে বলবেন, এক সাথে যেন এতোগুলো মানুষ না পাঠান। কালকে দুই-তিনজন এসেছিলেন, দু’দিন পুর্বেও দুইজন এসেছিলেন। যা হোক, এরপর তিনি আইন অনুযায়ী কাগজপত্র তৈরী করে দেন।

সেই কাগজ নিয়ে দু’দিন পর আবার তাবলীগী মারকাযে গেলাম। পৃথক পৃথক জামা‘আতে আমাদের নাম লিখে দেয়া হলো। এবার আমরা কাউকে বলিনি যে, আমরা নওমুসলিম। আলহামদুলিল্লাহ, জামা‘আতের সময়গুলো খুব ভালোভাবেই কেটেছে।

জামা‘আত থেকে ফেরার পর জানতে পারলাম, বেলাল ভাইকে এক মুরব্বী চিনে ফেলেছিলেন। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনিতো নওমুসলিম, কিছুদিন পূর্বেও এসেছিলেন? বেলাল ভাই উত্তরে বললেন, না, আমি জন্মগতভাবেই মুসলমান। দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত তাদের বাদানুবাদ চলে।  পরিশেষে তিনি কাগজপত্র দেখান এবং জামা‘আতে যান।

আমাদের জামা‘আতের আমীর সাহেব আমাদেরকে নামায শিখিয়েছেন। এক যুবকের কাছ থেকে কিছু উর্দুও শিখেছিলাম। তাতে কিতাবী তা‘লীম বুঝতে সুবিধা হয়।

তাবলীগ জামা‘আতে গিয়ে দিন দিন আমার দ্বীন শেখার চাহিদা বাড়তে লাগল এবং মনে হলো, ইসলামে দীক্ষিত নতুন মেহমানদের জন্য তা‘লীম-তারবিয়্যতের একটি বিশেষ ব্যবস্থাপনা তৈরী করা উচিত। যদি এই নওমুসলিমদের উপযুক্ত শিক্ষা-দীক্ষা এবং সামাজিক সমস্যার সমাধানের বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়, তাহলে অতি সহজেই তাদের বংশে ইসলামের দা‘ওয়াত পৌঁছানো যাবে। আর এর ফলে অপরাপর অমুসলিমদের মাঝেও ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানো সহজ হবে। ইসলাম হচ্ছে একটি আলো, সে নিজের মধ্যেই বিশেষ আকর্ষণ রাখে। অমুসলিমদের মাঝ থেকে অন্তরাল  উন্মোচন করেই আমরা তাদেরকে এ আলোর পথ দেখাতে পারি। তাই তাবলীগে পাঠানোর পাশাপাশি নওমুসলিমদেরকে তরবিয়্যত প্রদানের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনা জরুরী বলে আমি মনে করি।

আহমদ আওয়াহ : এখন আপনি কী করছেন? আপনার এ যাবতকালের জীবন সম্পর্কে কিছু বলবেন কি?

নওমুসলিম আনাস : আমি এখন পোনায় থাকি। বিজনৌর জেলায় এক মাওলানা সাহেব বেকারীর ব্যবসা করতেন । মাওলানা কালিম সাহেবের আদেশে তিনি আমাকে সাথে করে নিয়ে যান। তাঁর নাম মাওলানা নাসিম । তাঁর বেকারীতে ম্যানেজার পোস্টে দায়িত্ব পালন করছি।

আলহামদুলিল্লাহ, আমি কুরআন শিখেছি এবং উর্দুও শিখে গেছি। পরিপূর্ণভাবে দ্বীনের ওপর চলার চেষ্টা করছি। আর সময়-সুযোগ মতো দ্বীনের দাওয়াতের কাজ করছি। আমার এ অবস্থা দেখে মাওলানা নাসিম সাহেব খুব খুশী হন এবং বলেন যে, আমার কোনো মেয়ে নেই, থাকলে আপনার সাথে বিবাহ দিতাম।

বেকারীর কাছে মার্কেটে কলকাতার এক হিন্দু মেয়ে থাকতো। সে কাপড়ের শোরুমে রিসেপ্সনিস্ট হিসেবে কাজ করতো। ঘটনাক্রমে তার সাথে আমাদের পরিচয় হয়। তার পিতামাতা মারা গিয়েছিলেন এবং তাকে তার বিবাহিত ভাইয়ের সংসারে দাসীর মতো জীবনযাপন করতে হতো। পরিচয়ের সূত্র ধরে মাওলানা নাসিম সাহেব তাকে ইসলামের দাওয়াত দেন। সেই দাওয়াতে সারা দিয়ে মেয়েটি ইসলাম কবুল করতে আগ্রহী হয়ে উঠেন এবং মুসলমান হয়ে যান।

ইসলাম কবূলের পর মাওলানা নাসিম সাহেব মেয়েটির নাম রাখেন ফাতেমা এবং তাকে নিজের মেয়ে বানিয়ে নেন। আর তার যাবতীয় প্রয়োজনীয় সবকিছুর বন্দোবস্ত করে দেন। এরপর তার সাথে আমার বিয়ে দিয়ে স্বীয় পূর্বের ইচ্ছা বাস্তবায়ন করেন।

আলহামদুলিল্লাহ, আমি খুবই দ্বীনদার স্ত্রী পেয়েছি। সে চাকুরী ছেড়ে দিয়েছে। পবিত্র কুরআন শরীফ ও ইসলামের যাবতীয় আহকাম সে মাওলানা নাসিম সাহেবের স্ত্রীর কাছে শিক্ষা গ্রহণ করেছে।

দু’মাস পুর্বে আমার এক ছেলে হয়েছে। তার নাম রেখেছি আবু বকর। তাকে হাফেজ ও আলেম বানানোর নিয়ত করেছি। সেজন্য আপনারা দু‘আ করবেন।

আহমদ আওয়াহ : আল্লাহ তা‘আলার মেহেরবানীতে আপনিতো ইসলাম গ্রহণ করে চিরসাফল্যের পথ লাভ করেছেন। আপনার পরিবার-পরিজনের ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে কি কোনো ফিকির করেছেন?

নওমুসলিম আনাস : আমার বাবা ও বড় বোনতো পূর্বেই ইন্তিকাল করেছেন। আমার মা ও ভাই-বোন যারা ছিলেন তাদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছিয়েছি এবং তাদের ইসলাম গ্রহণের জন্য অনেক চেষ্টা-ফিকির করেছি। আলহামদুলিল্লাহ, মহান আল্লাহর দয়ায় আমার ছোট ভাই ও বোন ইসলাম কবূল করেছে। তারা এখন আমার কাছে রয়েছে।

আর আমার আম্মু অন্ধ হয়ে গিয়েছেন। তিনি তার ধর্মের দিক দিয়ে খুবই গোঁড়া। তবে আমাকে  খুবই ভালোবাসেন। আমার চেষ্টা ও ফিকির অব্যাহত রেখেছি। সেই সাথে মহান আল্লাহর নিকট দু‘আ করছি, আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে হিদায়াত দান করুন (আমীন)।

আহমদ আওয়াহ : আলহামদুলিল্লাহ, অনেক কিছু অবগত হলাম। এবার পাঠক-পাঠিকাগণের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন!

নওমুসলিম আনাস : এতটুকুতো আমি অবশ্যই আবেদন করতে চাই যে, অন্য ধর্ম থেকে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণকারী নওমুসলিম ভাই-বোনদের শিক্ষা-দীক্ষা এবং সুন্দর পরিবেশে তাদের পূনর্বাসনের একটি উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা দাওয়াতের সাফল্যের জন্য খুবই প্রয়োজন। তাই এ ব্যাপারে আমাদের বড়দের চিন্তা করা উচিত। আর এটা তেমন কোনো কঠিন ব্যাপার নয়। মদীনার ভ্রাতৃত্ব থেকে শিক্ষা নিয়ে আনসার ও মুহাজিরগণের ন্যায় যদি একজন মুসলমান একজন নওমুসলিম বা একটি পরিবারের জিম্মাদারী নিয়ে নেন, তাদের তরবিয়্যতের ব্যবস্থা করে জীবিকা উপার্জনের ক্ষেত্রে কোনো কাজে লাগিয়ে দেন, তাহলে এটা সহজ হয়ে যাবে।

আহমদ আওয়াহ : আপনি আমাদেরকে অনেক মূল্যবান সময় দিলেন। আপনার কাছ থেকে শিক্ষামূলক অনেককিছুই জানলাম।  এ জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ! আমাদের জন্য দু‘আ করবেন।

নওমুসলিম আনাস : আপনাদের প্রতিও শোকরিয়া জানাই। আমাদের জন্যও দু‘আ করবেন। মহান আল্লাহ আমাদের সকলকে হিদায়াতের ওপর রাখুন এবং সার্বিক কল্যাণ ও কামিয়াবী দান করুন (আমীন)।

(সূত্র : মাসিক আরমুগান, ভারত।  মে – ২০০৪ ইং সংখ্যা)

Related posts

Leave a Comment