সবুজ কুঁড়ি

পরিচালকের কথা

সবুজ কুঁড়ির সাথীরা! কেমন আছো তোমরা? নিশ্চয়ই ভালো আছো। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। মাসিক আদর্শ নারীর ২০০ সংখ্যা পূর্তির এমন মাহেন্দ্রক্ষণে ভালো না থেকে পারা যায়? এপ্রিল-২০১২ সংখ্যায় ২০০ সংখ্যায় পূর্ণ হয়েছে মাসিক আদর্শ নারী ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ।

মাসিক আদর্শ নারীর এতদূর আসার পেছনে তোমাদের অবদান অনেক। তোমরা সদস্য হয়ে, লেখা দিয়ে এবং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সবসময় প্রাণবন্ত করে রেখেছো তোমাদের প্রিয় সবুজ কুঁড়ি বিভাগটি। বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছো মাসিক আদর্শ নারীকে। তোমাদের এ অবদানকে আমরা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি।

তোমরা নিশ্চয় জেনেছো, ২০০ সংখ্যা পূর্তির এ স্মরণীয় মুহূর্তকে মনের এ্যালবামে স্মৃতিময় করে রাখার জন্য মাসিক আদর্শ নারী আয়োজন করেছে ‘লেখক-পাঠক-গ্রাহক সম্মেলন ও সবুজ কুঁড়ি মেলা’র। তা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২৭ এপ্রিল জাতীয় প্রেসকাবে। ‘সবুজ কুঁড়ি মেলা’ তো তোমাদেরকে উপলক্ষ করেই। এ আয়োজনে তোমাদের উপস্থিতি কামনা করছি।

বিভিন্নভাবে সাজানো থাকছে এ অনুষ্ঠান। সেখানে দেশের বিশিষ্ট লেখক-সম্পাদকগণ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করবেন। আলোচনা করবেন উলামা-মাশায়িখ ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ। আর বর্তমান সময়ের আলোচিত তরুণ লেখক-সাংবাদিকগণ তো থাকবেনই। তোমরা যথাসময়ে এসে পড়ো এ মনোজ্ঞ আয়োজনে। শেখা হবে অনেক কিছু, দেখা হবে অনেকের সাথে, পরস্পরে বাড়বে হৃদ্যতা। ব্যক্ত করবে আদর্শ নারী কিংবা সবুজ কুঁড়ি নিয়ে তোমাদের আবেগ-অনুভূতির কথা। সুযোগ থাকলে তোমাদের আবৃত্তিও শোনা যাবে। তাই সাথে করে স্বরচিত কবিতা বা ছোট গল্প নিয়ে আসতে পারো।

অনুষ্ঠানে মাসিক আদর্শ নারীর পক্ষ থেকে চারটি স্তরে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হবে। দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিগণকে প্রদান করা হবে ‘গুণীজন সম্মাননা ক্রেস্ট’, দেশের বিশিষ্ট লেখক ও মাসিক আদর্শ নারীর নির্বাচিত বেশ ক’জন লেখককে প্রদান করা হবে ‘লেখক সম্মাননা ক্রেস্ট’ এবং নির্বাচিত ক’জন সেরা এজেন্টকে প্রদান করা হবে ‘পরিবেশক সংবর্ধনা ক্রেস্ট’ আর সবুজ কুঁড়ির নির্বাচিত সেরা লেখকদের জন্য রয়েছে উৎসাহ ক্রেস্ট ও সনদ। এমন একটি মনোজ্ঞ আয়োজন উপভোগ করতে তোমাদের অবশ্যই ভালো লাগবে।

তোমাদেরকে নিয়ে এভাবে মাসিক আদর্শ নারী কাক্সিক্ষত লক্ষ্যপানে এগিয়ে যাবে। তোমরা সবুজ কুঁড়িরা হয়ে উঠবে সুবাসিত ফুল, যেমন আজ অনেকেই পুষ্প হয়ে চারিদিকে সুবাস ছড়াচ্ছো।

 

হলদে খাম

* মোঃ ইব্রাহীম খলিল, চাঁদপুর (নং ১৩৮৪৬)

– বর্তমান বা স্থায়ী যে যেই ঠিকানায় সবুজ কুঁড়ির সদস্য হতে চায়, তাকে সেই ঠিকানায়-ই সদস্য করা হয় এবং কার্ড তৈরী প্রদান করা হয়।

 

* মোঃ আনোয়ার হোসাইন, নোয়াখালী (নং ১৩৫৮৯)

– সবুজ কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় সুন্দর রচনা, উপস্থাপনা, বিন্যাস, মানানসই কাগজ ইত্যাদি বিবেচনা করে বিজয়ী নির্ণয় করা হয়। আর সাধারণ জ্ঞান ও বুদ্ধি খাটাও-এর ক্ষেত্রে উত্তর সঠিক হওয়ার পাশাপাশি এ বিষয়গুলোও বিবেচনা করা হয়।

 

* লুৎফুন্নাহার ভূঁইয়া (নিলুফা), সিলেট (নং ১০৩২৪)

– নাসির গাজীর ঝুলির গল্প নিজ থেকে লিখতে হয়। তবে কিছু কিছু প্রচলিত বুদ্ধিবৃত্তিক ঘটনা বা গল্পও নাসির গাজীর ঝুলিতে রূপান্তরিত করে দেয়া যায়।

 

* আবদুর রহমান জামী, গাজীপুর (নং ২৯৯৪)

– অনেক দেরীতে হলেও তুমি আবার লেখালেখিতে ফিরছো শুনে খুশী হলাম। সে জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। আর আদর্শ নারী অফিসে ‘সবুজ কুঁড়ি সাহিত্য আড্ডা’ নামে একটি মাসিক সাহিত্য সভা করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।

 

* হাফেজ মোঃ মেরাজুল হক, দিনাজপুর (নং ৯৫৯২)

– পত্র-পত্রিকার ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন একটি কমন ব্যাপার। তুমি নিজে পত্রিকা বের করলেও এদিকটা না দেখে পারবে না। এটাকে পত্রিকা অংশ বলা যায়। তবে আমরা বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে পাঠক-পাঠিকাগণের উপকারের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করি।

 

* এস. কে মিজান, কুড়িগ্রাম (নং ১০৭৮৮)

* জাকেরা বিনতে সিরাজী, টাঙ্গাইল (নং ১১৬০৫)

* এ.এম. উসমান গণী, কিশোরগঞ্জ (নং ১২৭১১)

* এইচ.এম. রোকনুজ্জামান, জামালপুর (নং ১৩৭৪৫)

– তোমাদের নাম-ঠিকানা পরিবর্তন বা শুদ্ধ করে নেয়া হলো।

 

বি.দ্র. : যারা গত নভেম্বর-২০১১ সবুজ কুঁড়ির সদস্য হওয়ার জন্য টাকা পাঠিয়েছিলে, কিন্তু এখনও সদস্য করা হয়নি, তাদেরকে অবিলম্বে ০১৮১৮-৩৯০৮৮০ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে।

 

তোমাদের রচনাবলী

ক্ষুদে প্রবন্ধ

 

সাহিত্য আসরের আয়োজনে

হাফেজ শেখ আবু বকর বিন হারুন, ঢাকা (নং ১১১১১)

 

বন্ধুরা! আমরা সবাই সবুজ কুঁড়ির সাথী। আমাদের লক্ষ্যÑবাংলা সাহিত্যে দক্ষতা অর্জন করে দেশ থেকে সাহিত্যের নামে অশ্লীলতা আর অপসংস্কৃতির অবসান ঘটানো এবং জাতিকে উপহার দেয়া একটি সুশোভিত, পরিশীলিত, সুষ্ঠু সাহিত্যধারা আর মনোরম ইসলামী সংস্কৃতি। যা একটি জাতিকে পৌঁছে দিতে পারে উন্নতির চূড়ান্ত শিখরে। এই লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য আমরা সদা তৎপর থাকি। এ জন্য আমরা গ্রহণ করি নানা পদক্ষেপ।

বন্ধুরা! আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য আরো একটি পদক্ষেপ নিতে পারি। আমরা যারা সবুজ সদস্য এবং যারা নানা কারণে এ বিভাগটিকে পছন্দ করি, প্রত্যেকেই নিজ এলাকায় সমবয়স্ক ও ছোট ভাইদের নিয়ে গড়ে তুলতে পারি সাহিত্য আসর।

কাসের পড়া ঠিক রেখে দৈনিক বিদ্যালয়ে বা নির্দিষ্ট কোনো স্থানে শুরু করতে পারি আমাদের এ আসর। এ সাহিত্য আসর থাকবে সবার জন্য উন্মুক্ত। প্রাথমিক পর্যায়ে বিদ্যালয়ের বহিরাগত-সাথীদেরকে আহ্বানের মাধ্যমে এতে শরীক করা যেতে পারে।

এ আসরে আমরা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাস, বাংলা শব্দের শুদ্ধ বানান ও উচ্চারণ পদ্ধতি, বাংলা ব্যাকরণ, চিঠিপত্র, আবেদন, দরখাস্ত, রোজনামচা, ফিচার, প্রতিবেদন, ছোট গল্প, রচনা, প্রবন্ধ, ছড়া-কবিতা ইত্যাদি সাহিত্য জ্ঞান কিভাবে উপলব্ধি ও অর্জন করা যায়, এ বিষয়ে আলোচনা, লেখাপাঠ এবং পঠিত লেখার উপর আলোচনা করতে পারি। বক্তৃতা দেয়ার পদ্ধতি, কবিতা আবৃত্তি, বাংলা দ্রুত পঠনরীতি, হাতের লেখা চালু ও সুন্দর করার নিয়ম ও ইসলামী সংগীত চর্চা ইত্যাদিও এ সাহিত্য আসরে স্থান পেতে পারে।

আমরা যদি প্রত্যেকেই নিজ নিজ মহল্লায় এমন একটি সৃজনশীল সাহিত্য আসর গড়ে তুলতে পারি, তাহলে বেশী দেরী নয় যে, অল্প সময়ে সহজেই ইনশাআল্লাহ আমরা আমাদের কাক্সিক্ষত মাকামে পৌঁছে যেতে সক্ষম হবো। আমাদের থেকেই ধীরে ধীরে গড়ে উঠবে আল্লামা ইকবাল, সা‘দী, রুমী, খৈয়াম, নজরুল, ফররুখসহ অসংখ্য ইসলামী রেনেসাঁর অগ্রপথিক, সুসাহিত্যিক, সাংবাদিক, কবি ও দার্শনিক। ইসলামী সাহিত্য ও সংস্কৃতি রক্ষায় তৈরী হবে সুদৃঢ় জামা‘আত। আমাদের হুংকারে ফিরবে জাতির হুঁশ। সাহিত্যের অপব্যবহার আর বিকৃত সংস্কৃতি লেজ গুটিয়ে পালাতে বাধ্য হবে।

হ্যাঁ বন্ধুরা! আমরা যদি এমন একটি সাহিত্য আসর গড়ে তুলতে পারি, তাহলে আমাদের অবসর সময়গুলোরও কিন্তু হিফাজত হবে। আর এলাকার সক্রিয় ছেলেদের সংস্পর্শে এক সময় অলস, নিষ্ক্রিয়রাও আগ্রহী ও উদ্যমী হয়ে উঠবে এবং এতে করে আমাদের উস্তাদ, মুরব্বী ও এলাকার গণ্যমান্য সকলেরই আমাদের প্রতি একটা সুনজর পড়বে, যা আমাদের সফলতার জন্য কাম্য।

আর শোন! আমাদের এ আসর জমে গেলে, সময়-সুযোগ বুঝে বড়দের পরামর্শ নিয়ে মাঝে মাঝে দেশের নামকরা আর প্রতিষ্ঠিত সুস্থ ভাবধারার সাহিত্যিক সাংবাদিক ও কবিদের দাওয়াত করা যেতে পারে। এতে আমাদের এ সাহিত্যধারা আরো বেগবান হবে।

 

ইতিহাসের গল্প

 

প্রকৃত বিজয়

মাহমুদা সুলতানা, পাবনা (নং ১২৬১১)

 

ইংরেজ শাসনামলের প্রথম দিকের ঘটনা। মুজাফফরনগর জেলার কান্দেহলা নামক কসবার এক স্থানে একটি জায়গা নিয়ে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়, জায়গাটি হিন্দুদের মন্দিরের, নাকি মুসলমানদের মসজিদের। তখন ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেট উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর মুসলমানদের কিছু লোককে একান্তে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন, আচ্ছা! হিন্দুদের মধ্যে কি এমন কোন লোক আছেÑযার সত্যবাদিতার ওপর আপনারা আস্থা রাখতে পারেন এবং যার সাক্ষ্যের ওপর ফায়সালা দেয়া যায়? তারা জানাল, তাদের নজরে এমন কোনো লোক নেই। এরপর তিনি হিন্দুদের ডেকে জিজ্ঞেস করলে তারা বলল, বড় মুশকিলের ব্যাপার! কেননা, ব্যাপারটা সাম্প্রদায়িক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট। তারপরও মুসলমানদের মধ্যে একজন বুুযুর্গ আছেন যিনি কখনও মিথ্যা বলেন না। আমাদের বিশ্বাস, এ সময়ও তিনি সত্যই বলবেন।

এই বুযুর্গ ছিলেন হযরত শাহ আবদুল আযীয দেহলভীর শাগরিদ এবং সাইয়েদ আহমদ শহীদ (রহ.)-এর খলীফা মুফতী ইলাহী বখ্শ সাহেবের খান্দানের। ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেট বুযুর্গের খিদমতে লোক পাঠিয়ে তাকে আদালতে ডেকে পাঠান। বুযুর্গ বললেন, আমি কসম খেয়েছি, কখনও ইংরেজের মুখ দেখব না। ম্যাজিস্ট্রেট এরপর বলে পাঠালেন, আমার মুখ দেখার দরকার নেই। তবুও আপনি মেহেরবানী করে আসুন, ব্যাপারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি না আসলে ফায়সালা হচ্ছে না।

অবশেষে বুযুর্গ এলেন এবং ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেটের দিকে পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে গেলেন। গোটা বিষয়টি বুযুর্গের সামনে পেশ করা হলো এবং এ বিষয়ে তিনি যা জানেন তা বলতে বলা হলো। হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের লোকের দৃষ্টি বুযুর্গের প্রতি নিবন্ধ এবং সকলের কান তার জাওয়াব শোনার জন্য উদগ্রীব, যেই জাওয়াবের ওপর এই গুরুত্বপূর্ণ সাম্প্রদায়িক ও সংঘাতপূর্ণ বিষয়টির ফায়সালা নির্ভর করছে। এমন সময় বুযুর্গ বললেন, আসল কথা হলো, জায়গাটা হিন্দুদের। মুসলমানদের সঙ্গে এই জায়গার আদৌ কোনো সম্বন্ধ নেই। ব্যস! আদালতের ফায়সালা হয়ে গেল।  জায়গা হিন্দুরা পেল আর মুসলমানরা মোকাদ্দমায় হেরে গেলেন।

কিন্তু মুসলমানরা হারলেও ইসলামের নৈতিক বিজয় হলো। সত্যবাদিতা ও ইসলামী আখলাক প্রকাশে সেদিন মুসলমানরা কয়েক হাত মাটি হারিয়ে বহু অমুসলিমের বিবেক-বিবেচনা ও মন-মস্তিষ্ক জিতে নেন। অনেক হিন্দু সেদিনই বুযুর্গের হাতে ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমান হয়ে যান।

[তথ্যসূত্র : মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালো]

 

স্মৃতির পাতায়

 

আমও গেল ছালাও গেল

মোস্তফা ওয়াদুদ সিরাজী, চাঁদপুর (নং ১৩২৯২)

 

সমাজের মুরব্বীরা কথায় কথায় এক ধরনের উপদেশ দিয়ে থাকেন, বেশী পণ্ডিতী করিসনে, তাহলে কিন্তু আমও যাবে ছালাও যাবে। আবার আমরা কোনো কাজে সফল না হলে বলে থাকি, আমার আমও গেছে ছালাও গেছে। তার মানে কিন্তু এই নয় যে, আম আর আমের বস্তাই গেছে। বরং অন্য কিছুর বেলায়ও উক্ত বাক্য বলে থাকি। জানি না, মানুষ অন্য নাম না রেখে এ অদ্ভুত নামটা কেন রাখলো। মনে হয় এর একটা হেতু রয়েছে। যাক সে কথা। তবে আমার জীবনে একবার এমন একটি ঘটনা ঘটেছিলো যে, সত্যি সত্যিই আমও গেছে ছালাও গেছে।

আমি তখন বিক্রমপুর ঢুলুগাঁও মাদরাসায় হিফজখানায় পড়ি। বয়স ১২-১৩ হবে। চলছে জ্যৈষ্ঠ মাস। গ্রামের মানুষগুলো ইরি ধান কাটায় ব্যস্ত। সেখানে প্রতি বছর ইরি ধানের মৌসুমে কালেকশন করা হতো। এবারও তাই হলো। আমাদের পাঁচজনকে পাঠানো হলো মাদরাসা থেকে ছয় মাইল দূরত্বের একটি গ্রামের বাড়ীতে। কয়েকটি ছালা নিয়ে ঝটপট রওয়ানা দিলাম। সকাল সকাল বাড়ীতে পৌঁছে গেলাম।

সে বাড়ীটি ছিল একজন হাজী সাহেবের। তিনি আর তার স্ত্রী ছাড়া কেউ নেই বাড়ীতে। বিশাল বাড়ীতে মাত্র দু’জন মানুষ। বৃদ্ধের রয়েছে গোলা ভরা ধান, বাগান ভরা আম, আরো নানা রকমের ফলফলাদির বাগান। হাজী সাহেব প্রতিবছর এ মৌসুমে কয়েক মণ ধান মাদরাসায় দেন। তাই আমাদেরকে তা আনতে প্রেরণ করা হয়।

সেই বাড়ীতে পৌঁছে অনেক খোঁজাখুঁজির পর বৃদ্ধকে না পেয়ে বিশ্রাম নিলাম। এর মাঝে কয়েকজন বলাবলি করতে লাগল, ওই দেখ আম কেমন টকটকে লাল হয়ে আছে, চল পাড়ি। কথামতো আম পেড়ে বস্তায় ভরতে লাগলাম। তার ফাঁকে যা পারা যায় খেলাম। মধুমাস, তাই মধু আহরণে জড়ালাম।

ইতোমধ্যে বৃদ্ধ হাজী সাহেব কোত্থেকে এসে হাজির হলেন। তাকে দেখেই পরি মরি করে ভো দৌড়। এক দৌড়ে  মাদরাসায়। পিছনে রয়ে গেল আমাদের আম আর ছালা। আমাদের আমও গেল ছালাও গেল। এখন আমি বুঝতে পারছি, অনুমতি ছাড়া আমাদের ওই আম পাড়ার কাজটি মোটেও উচিত হয়নি। এমন ক্ষেত্রে পাওনা মাফ করিয়ে না নিলে পরকালে এ জন্য আটকে যেতে হবে।

 

 

ছড়া-কবিতা

 

ওই নীল আসমানে

ফাতিমাতুয যাহরা লুবাইনা, মোমেনশাহী (নং ১৩৯৮৫)

 

ওই নীল আসমানে

গোধূলির লগনে

প্রভু তোমায় খুঁজি,

রোদেলা দুপুরে

ঢেউয়ে মাতাল সাগরে

প্রভু তোমায় খুঁজি।

ঝিকিমিকি তারাতে

জোছনা ভরা রাতে

প্রভু তোমায় খুঁজি,

সবকিছুর  স্রষ্টা তুমি

তাইতো তোমায় খুঁজি।

 

বৈশাখ

মোঃ কামরুজ্জামান, শেরপুর (নং ৭৭১৬)

 

এসো এসো বৈশাখ এসো তুলে কম্পন,

উত্তাল বাতাসে ভেসে আসে শনশন।

অতীতের দিনগুলো ফেলে এসে বহুদূর,

নতুনের উৎসবে করি হৈ-হুল্লোড়।

আকাশের কালো মেঘে থেকে থেকে গর্জন,

ধুলাবালি বাতাসে বৃষ্টির বর্ষণ।

 

দাদীর স্মৃতি

সিয়াম বিন আহমাদ, ফরিদপুর (নং ১৩৮২৩)

 

একটা বছর গত হলো হারিয়ে গেছেন দাদী

দাদীর কথা ভেবে ভেবে আজও আমি কাঁদি।

দাদীর হাতের গরম পিঠে খাইনে দিন কত,

অনেক পিঠে খাই তবু হয় না দাদীর মতো।

দাদী আমায় খাইয়ে দিতেন দুধ-কলা ভাতে,

মাঝে মাঝে সেই কথা মনে পড়ে রাতে।

দাদীর হাতের পান খেয়ে লাল করতাম ঠোঁট,

কারটা বেশী লাল হয়েছে করতাম আবার জোট।

সেদিন দাদী ফাঁকি দিয়ে কোথায় যেন গেলেন,

একটা বছর কেটে গেল ফিরে আর না এলেন।

 

আমার প্রিয়

জাকেরা বিনতে সিরাজী, টাঙ্গাইল (নং ১১৬০৫)

 

প্রিয় আমার নামায পড়া

প্রিয় কুরআন তিলাওয়াত,

প্রিয় আমার গভীর রাতে

তাহাজ্জুদ শেষে মুনাজাত।

প্রিয় আমার সত্য বলা

সত্য জীবন গড়া,

প্রিয় আমার ক্রোধের সময়

নিজকে দমন করা।

 

নীল আকাশ

কোহিনূর আকতার, চট্টগ্রাম (নং ১০২৩৯)

 

আকাশটা আজ দেখেছি আমার

অবাক নয়ন মেলে,

মেঘ যে ছেঁড়া ছেঁড়া নায়ের

রঙিলা পাল তুলে।

যাচ্ছে ভেসে সুদূর দেশে

ঠিকানাহীন পথে,

মন যে আমার বলছে তাদের

সঙ্গে আমায় নিতে।

মেঘের ভেলায় চড়ে আমি

মেঘের রাণী হবো,

ইচ্ছে মতো নীল আকাশটা

ঘুরে ঘুরে দেখবো।

 

২০০ সংখ্যা পূর্তি

শেখ খুর্শিদুজ্জামান জীম, বগুড়া (নং ১১৭১১)

 

আজ বুঝি হলো তোমার ২০০ সংখ্যা পূর্তি,

তাই তোমার সকল পাঠকের  মনে অনেক ফূর্তি।

তোমায় হাতে পেলে আমার ভরে যায় মন,

তোমার থেকে দ্বীনের আলো ছড়ায় সারাক্ষণ।

তুমি আরো সুন্দর হও সেই কামনা করি,

তুমি আমার প্রিয় পত্রিকা মাসিক আদর্শ নারী।

 

হৃদয়ের প্রশান্তি

কাজী হামদুল্লাহ শায়খী, ঢাকা (নং ১৩০৩৪)

 

সবুজ কুঁড়ি তুমি আমার

হৃদয়ের প্রশান্তি,

তোমায় পেলে দূর হয়ে যায়

আমার সকল কান্তি।

তুমি আমার মরুর বুকে

শীতল বারিধারা,

তাইতো তোমায় পেতে আমার

হৃদয় পাগলপারা।

 

তোমার পরশে

ফাতেমাতুজ জোহুরা, সিরাজগঞ্জ (নং ১১৪৯৮)

 

হে প্রিয় আদর্শ নারী

তোমার পরশে ধন্য আমি,

তুমি যুগের শ্রেষ্ঠ পত্রিকা

তোমার ছোঁয়াতে জাগে হিয়া।

 

তুমি কাণ্ডারী

মোঃ মোস্তফা জামান, জয়দেবপুর

 

সত্যের সন্ধানে তুমি নির্ভীক

আঁধারে আলো ছড়াও সদা চারিদিক।

তোমাকে পেয়ে পথহারা নর-নারী,

মুক্তির জীবন তারা নিয়েছে আজ গড়ি।

Related posts

Leave a Comment