দেশে দেশে পদক্ষেপ এমএলএম ব্যবসা জেঁকে বসে ,..

দেশে দেশে পদক্ষেপ

 

মূলত উন্নত বিশ্বের রাষ্ট্রগুলো এমএলএম ব্যবসা জেঁকে বসে ১৯৬০ সাল থেকে। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় ১৯৯৫ সালের দিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনসাধারণ বুঝতে পারে যে, তারা প্রতারিত হচ্ছে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানিগুলোর দ্বারা। এরপর তুমুল আন্দোলন ও জনরোষ ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন দেশে। অবশেষে ২০০০ সালের পর থেকে বিভিন্ন রাষ্ট্রে এমএলএম ব্যবসা নিষিদ্ধ হতে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশে এমএলএম ব্যবসার ¯^র্ণযুগ চলছে। নাম জানা না জানা অনেক এমএলএম কোম্পানি হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলো যেভাবে লাখ লাখ লোকের প্রতারণার পর এমএলএম পদ্ধতির ব্যবসা তাদের দেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। আমাদের দেশেও এরই মধ্যে লাখ লাখ মানুষ এমএলএম কোম্পনিগুলোর কাছে প্রতারিত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন প্রভৃতি দেশের মতো গণরোষ ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা হওয়ার পর মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) পদ্ধতির ব্যবসাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পূর্বে  কম ক্ষতিকে মেনে নিয়ে যত অল্প সময়ের মধ্যে সম্ভব মাল্টি লেভেল মার্কেটিং পদ্ধতির ব্যবসাকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে জনসাধারণের বিশ্বাসের সুযোগ ব্যবহার করে তাদের প্রতারিত হওয়ার  হাত থেকে রক্ষা করা প্রয়োজন।

 

 

 

২০০০ সালের পর থেকে সারা বিশ্বে ৫৩টি উন্নত রাষ্ট্রে এমএলএম পদ্ধতির ব্যবসা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ১৯৮০ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত এমএলএম পদ্ধতির ব্যবসার স্বর্ণযুগ হিসেবে ধরা হয়। এ সময়কালে উন্নত বিশ্বের বড় বড় অর্থনীতিবিদও এমএলএম ব্যবসার ক্ষতিকর দিকগুলো বুঝতে পারেননি। পরবর্তী সময়ে অসংখ্য মানুষের প্রতারণা, মামলা ও হামলার মাধ্যমে শেষ হয় এমএলএম ব্যবসার স্বর্ণযুগ। এই সময়ের মধ্যে উন্নত বিশ্বের শীর্ষে অবস্থান গ্রহণকারী এমএলএম কোম্পানিগুলো তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রমের নামে ওয়ার্ল্ড ফুটবল চ্যালেঞ্জ আয়োজন, আমেরিকান যুব সকার প্রতিযোগিতা আয়োজন, ফুটবল দল এফসি বার্সেলোনা, ভ্যালেন্সিয়া  সিএফ, স্যান্তোস এফসি, এফসি স্পরটেক মস্কো, মেক্সিকোর পুমা ও মান লুইস, ইসরায়েলের ম্যাককাবি, পোল্যান্ডের উইসলা কারলো ও ইতালির বোটাফাগো রেগাটাসের মতো দলের স্পন্সরশিপ নেয়। এভাবে তৎকালীন হঠাৎ আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া এমএলএম কোম্পানিগুলো সামাজিক দায়বদ্ধতার নামে বেছে বেছে এমন বিষয়ে অর্থ খরচ করতে থাকে যেখানে খরচ করলে সহজেই প্রচার পাওয়া যায়। এরপর ক্রেতা-ভোক্তা ও ডিস্ট্রিবিউটরদের এ নবাগত ব্যবসার ওপর বিশ্বাস ও আস্থা স্থাপনের জন্য বলতে থাকে যেÑ আমাদের কোম্পানি আর দশটি বড় কোম্পনির মতো রাষ্ট্র দ্বারা স্বীকৃত ও গ্রহণ যোগ্য কোম্পানি, না হলে আমরা কীভাবে সরকারের ও সবার সামনে সরকারি ও বেসরকারি লোকদের নিয়ে এত বড় বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারছি। এরপর ভোক্তা-ক্রেতা-ডিস্ট্রিবিউটররা কোম্পানির ওপর আস্থা অর্জন করে, একইভাবে এমএলএম কোম্পানিটি সমাজের ক্ষমতাশালী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সংস্পর্শে যায় ও তার ব্যবসার নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করে। কিন্তু এত কিছুর পরও শেষ রক্ষা হয়নি। ২০০০ সালের পর সারা বিশ্বের প্রতারিত লাখ লাখ মানুষের জনরোষের কাছে ক্ষমতাশালী গোষ্ঠী ও সরকার মাথানত করত বাধ্য হয়েছে। ওই সব দেশে এমএলএম কোম্পানির প্রতারণামূলক ব্যবসাকে বন্ধ ঘোষণা করতে হয়েছে।

 

Related posts

Leave a Comment